পাক প্রধানমন্ত্রীর জবাবে বিস্মিত নয় দিল্লি। এই ভাষাতেই ইমরান খানের মঙ্গলবারের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাল নর্থ ব্লক। এদিন বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়, "পুলওয়ামায় আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর আক্রমণকে জঙ্গি নাশকতা হিসাবে যে মানতে নারাজ পাক প্রধানমন্ত্রী, তাতে আমরা এতটুকু অবাক নই। এমন ঘৃণ্য আক্রমণকে তিনি তিরস্কারও করেননি এবং শোক প্রকাশও করেননি"। জইশ-ই-মহম্মদ এবং মাসুদ আজহার যে পাকিস্তানে বাসা বেঁধেই কাজ করে, সে বিষয়টি সকলেই জানে। এই প্রমাণই কি যথেষ্ট নয় তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য, শ্লেষ যুক্ত প্রশ্ন দিল্লির।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পুলওয়ামার ঘটনায় পাক যোগ অস্বীকার করেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ‘‘কোনও প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে ভারত’’, এদিন একথাই বলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ভারতের ‘বদলা নেওয়ার’ কথা প্রসঙ্গে প্রবাদপ্রতিম পেস বোলারের হুঁশিয়ারি, ‘‘যদি আপনারা (ভারত সরকার) ভাবেন, আমাদের আক্রমণ করবেন, আর আমরা কিছুই ভাবব না, সোজাসুজি জবাব দিয়ে দেব।’’
তবে অস্ত্র হাতে যুদ্ধই যে কাশ্মীর সমস্যার একমাত্র সমাধান নয়, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বাইশ গজে বহু যুদ্ধের নায়ক ইমরান। পাক প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‘আমরা সকলেই জানি, যুদ্ধের সিদ্ধান্ত মানুষেরই হাতে। কিন্তু কেউ জানি না কোথায় পৌঁছবে এই পরিস্থিতি। সে কথা কেবল ঈশ্বরই জানেন।’’ ইমরান আরও বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মেটানো উচিত।’’
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা করে পাকিস্তানের কোনও ‘লাভ নেই’ বলেও এদিন সরব হয়েছেন ইমরান। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘এটা নতুন পাকিস্তান...আমরা স্থিরতা চাই। ভারতে হামলা চালিয়ে আমাদের কোনও লাভ নেই।’’ ভিডিও বার্তায় ইমরান খান বলেছেন, ‘‘ভারত সরকারকে একটা কথাই বলতে চাই, পাকিস্তানের কারও বিরুদ্ধে যদি প্রমাণ থাকে, তবে আমরা পদক্ষেপ করব।’’
আরও পড়ুন, পুলওয়ামা হামলার নেপথ্যে পাকিস্তানই, দাবি সেনার
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪০ জন জওয়ান। যে ঘটনায় পাকিস্তানই দায়ী বলে মঙ্গলবার সরব হয়েছে ভারতীয় সেনা। এদিন সেনার তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘পুলওয়ামায় হামলার নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত রয়েছে। জইশ-এ-মহম্মদকে কাজে লাগিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।’’ সেনার তরফে এও বলা হয়েছে, এ ঘটনায় পাকিস্তান ও আইএসআই জড়িত। ‘‘জইশ-এ-মহম্মদ পাক সেনার সন্তান’’ বলেও কটাক্ষ করেছেন সেনা।
অন্যদিকে, পুলওয়ামার ঘটনায় পাকিস্তানকে নাম না করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খোদ নরেন্দ্র মোদীও। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “যারা এ হামলা চালাল এবং যারা এতে মদত দিয়েছে, তাদের বিরাট মূল্য চোকাতে হবে। দোষীদের ছাড়া হবে না।” মোদী এও বলেছেন, “প্রতিবেশী রাষ্ট্র আমাদের দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।” পুলওয়ামা হামলার পরই পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা কেড়ে নিয়েছে ভারত।
এদিকে, পুলওয়ামার হামলার পর দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে জটিলতা কাটাতে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতারেজকে চিঠি পাঠিয়েছেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি।
Read the full story in English