Pakistan Remarks On Law: ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিল ভারত। ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন নিয়ে মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া মোদী সরকারের।
ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন নিয়ে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারত কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মঙ্গলবার বিদেশমন্ত্রকের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করার কোনও অধিকার পাকিস্তানের নেই।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে পাকিস্তানের মন্তব্য আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছি। এই ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়।" তিনি আরও বলেন, "পাকিস্তান নিদের দেশের সংখ্যালঘুদের করুণ অবস্থার দিকে নজর দিক, অন্যদের উপদেশ দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই"।
পাকিস্তানের অভিযোগ
কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র শাফকাত আলি খান ভারতের ওয়াকফ আইন সংশোধনের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এই আইন ভারতের মুসলমানদের ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। পাশাপাশি তিনি আরও অভিযোগ তোলেন, এই আইন ভারতীয় মুসলিদের ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করবে। পাকিস্তান আরও অভিযোগ করেছে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন আনার মাধ্যমে মুসলিমদের মসজিদ এবং মাজার-সহ তাঁদের সম্পত্তি থেকে ‘উচ্ছেদ’ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মোদী সরকার।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
এই মন্তব্যকে "রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" বলে কড়া ভাষায় প্রত্যাখ্যান করে ভারত। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে প্রতিটি ধর্মের মানুষের সমান অধিকার রয়েছে। এই আইন শুধুমাত্র প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের কথা ভেবেই আনা হয়েছে। তবে বিরোধী দল এবং কিছু মুসলিম সংগঠন এই সংশোধনী নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তাদের আশঙ্কা, এই আইনের মাধ্যমে অমুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ থাকছে, যা ঐতিহাসিক ধর্মীয় সম্পত্তিগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
আইনটি কীভাবে গৃহীত হয়?
২০২৩ সালের আগস্টে এই বিলটি প্রথম সংসদে তোলা হয়। পরে বিরোধিতার মুখে এটি যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়। চলতি বছরের ২ এপ্রিল বাজেট অধিবেশনে এটি পুনরায় উত্থাপন করা হয়। ৩ এপ্রিল লোকসভায় ১২ ঘণ্টার বিতর্ক শেষে এটি পাস হয়। পরদিন রাজ্যসভাতেও বিলটি পাশ হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতি পাওয়ার পর এটি আইনে পরিণত হয়।
সরকারের অবস্থান
সরকারের দাবি, এই আইন কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয় বরং ওয়াকফ সম্পত্তির স্বচ্ছ এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। সরকার বলেছে, এই সংশোধনী বৈচিত্র্য ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে এবং দেশের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে।