আর্থিক সংকটে বিপর্যস্ত পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি দেখে শঙ্কিত। দ্বীপরাষ্ট্রের মতো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না-হয়, তার জন্য যাবতীয় চেষ্টা করছে শেহবাজ শরিফের পাকিস্তান সরকার। উন্নয়নের ধারা বজায় রেখে করুণ আর্থিক পরিস্থিতি সামলাতে পাকিস্তানের এখন বিপুল অঙ্কের ঋণ দরকার। আর, এই ঋণ পাকিস্তানকে কেবল দিতে পারে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার।
সেই ঋণ নিশ্চিত করতে ন্যূনতম গ্যারান্টির অর্থ জমা রাখতে হবে পাকিস্তানকে। সেদেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে। দেখাতে হবে, যে তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারের ঋণ শোধ করতে সক্ষম। এই ন্যূনতম আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করতে এবার পেট্রোপণ্যের ওপর ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটল পাকিস্তান সরকার। ভর্তুকি কমানোয় জ্বালানির দাম বাড়ল ২৯ শতাংশ।
গত ২০ দিনের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয়বার জ্বালানির দাম বাড়াল শেহবাজ শরিফের সরকার। বুধবার মধ্যরাত থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। ভর্তুকি হ্রাসের ফলে পেট্রোলের দাম প্রতিলিটারে ২৪ টাকা আর হাই-স্পিড ডিজেলের (এইচএসডি) প্রতিলিটারে ৫৯.১৬ টাকা বেড়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল।
জ্বালানির এই দাম বৃদ্ধির ফলে পাকিস্তানে বিভিন্ন পণ্যের দাম আরও বাড়তে চলেছে। বারবার জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যেই জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। তার মধ্যে বুধবার মধ্যরাতে আবার ২৯ শতাংশ দাম বৃদ্ধি। ফলে, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। পেট্রোলের দাম হয়েছে লিটারপ্রতি ২৩৩ টাকা ৮৯ পয়সা। হাই-স্পিড ডিজেলের দাম হয়েছে লিটারপ্রতি ২৬৩ টাকা ৩১ পয়সা।
আর, কেরোসিনের দাম হয়েছে লিটারপ্রতি ২১১ টাকা ৪৭ পয়সা। ফলে, শেহবাজের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের ওপর ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সাধারণ পাক নাগরিকদের। পরিস্থিতি বুঝে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি জানিয়েছেন, পেট্রোপণ্যের ভর্তুকি কমানো ছাড়া তাঁর কাছে বিকল্প ছিল না।
আরও পড়ুন- বিক্ষোভের মাঝেই পুলিশের কলার ধরলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, জোর শোরগোল
এর আগে ইমরান খান সরকারের জমানায় পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারের একটি চুক্তি সই হয়েছিল। সেই চুক্তির জন্যই আইএমএফের ঋণ পেতে পাকিস্তানের বর্তমানে অসুবিধা হচ্ছে বলে ইসলামাবাদের বর্তমান সরকারের দাবি। একইসঙ্গে শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, রাজস্ব একটু বাড়লেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারের ঋণ পেতে তাঁদের সুবিধা হবে। সেই ঋণ পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই আইএমএফের প্রতিনিধির সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের প্রাথমিক কথাও হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছেন শরিফ।
Read full story in English