হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য এবং হিংসা-হানাহানির ডাক দেওয়ার ঘটনায় এবার হস্তক্ষেপ করল পাকিস্তান। পাক বিদেশ মন্ত্রক সোমবার ভারতের শীর্ষ কূটনীতিবিদকে তলব করল। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইসলামাবাদের হাই-কমিশনে ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।
একটি সরকারি বিবৃতিতে পাক মন্ত্রক জানিয়েছে, আজ, ইসলামাবাদে বিদেশ মন্ত্রকের দফতরে ভারতীয় শীর্ষ আধিকারিককে তলব করা হয়েছে এবং তাঁকে পাকিস্তান সরকারের গভীর উদ্বেগের কথা ভারত সরকারকে জানানোর জন্য বলা হয়েছে। যেখানে হিন্দুত্ববাদীরা ভারতীয় মুসলিমদের গণহত্যার ডাক দিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন। সেই বক্তব্য বেশ কিছু মাধ্যমে রিপোর্ট হয়েছে।
ভারতীয় দূতাবাসের শীর্ষ আধিকারিক এম সুরেশ কুমারকে সোমবার দুপুরে তলব করে পাক আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন কারণে সাধারণত ভারতীয় প্রতিনিধিকে তলব করে পাক মন্ত্রক। কিন্তু ভারতে সংখ্যালঘুদের সংক্রান্ত বিষয়ে তলব খুবই দুর্লভ ঘটনা। এতদিন ভারতের তরফ থেকে পাক হিন্দু এবং শিখদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় পাকিস্তানের কূটনীতিবিদকে ডেকে পাঠানোর উদাহরণ রয়েছে। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক কালে অগস্ট মাসে রহিম ইয়ার খান অঞ্চলে হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনায় এমনটা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, হরিদ্বারের অনুষ্ঠানে বিতর্কিত ইয়াতি নরসিংহনন্দ, দাসনা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দেন এবং হিন্দুদের অস্ত্র তুলে নেওয়ার জন্য আহ্বান করেন। তাঁদের নির্দেশ দেন, যাতে ২০২৯ সালে কোনও মুসলিম যেন প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন। তাঁর বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশে একাধিক এফআইআর দায়ের রয়েছে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরে।
আরও পড়ুন গান্ধীকে ‘অবমাননা’, হিন্দু ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস উদ্ধব সরকারের
সেদিনের অনুষ্ঠানে দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র অশ্বিনী উপাধ্যায়ও ছিলেন। দেশজুড়ে সমালোচনার জেরে হিংসাত্মক মন্তব্যের অভিযোগে স্বামী ধরমদাস, সাধ্বী অন্নপূর্ণা এবং ওয়াসিম রিজভি ওরফে জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগীর বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার এফআইআর দায়ের হয়েছে।
পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক ভারত সরকারের আচরণ নিয়ে অসন্তুষ্ট। কারণ যেখানে সংখ্যালঘুদের গণহত্যার ডাক দেওয়া হচ্ছে, সেই ঘটনায় না তো সরকার কোনও আপত্তি জানিয়েছে, না নিন্দা জানিয়ে কোনও বিবৃতি জারি করেছে। কোনও ব্যবস্থাও নেয়নি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।