প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী তথা পিটিআই প্রধান ইমরান খানের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনল পাক সেনা। হিংসায় মদত দিয়েছেন এমন ৪০ জনের বেশি পিটিআই সমর্থককে নিজের বাড়িতেই আশ্রয় দিয়েছেন তিনি। দোষীদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ইমরানের কাছে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে পাক প্রশাসন।
আজ দুপুর ২ টোয় সেই সময়সীমা শেষ হতে চলেছে। তার মধ্যেই ফের গ্রেফতারির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পিটিআই প্রধান। যদিও ইমরান খানের গ্রেফতারি নিয়ে পাঞ্জাব প্রদেশের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী আমির মীর জানিয়েছেন, " পিটিআই প্রধানকে গ্রেফতারের কোন পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত নেই" ।
মন্ত্রী বলেন, আগে সরকারের দেওয়া সময়সীমা পর হতে দিন। তারপর সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। এই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরেই। এর আগে ইমরানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও পাক সরকারের এই আশ্বাসে কোন ভাবেই সন্তুষ্ট হতে পারছেন না পিটিআই প্রধান। ইমরান এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, "সম্ভবত পরবর্তী গ্রেফতারের আগে এটাই আমার শেষ টুইট। পুলিশ আমার বাড়ি ঘিরে রেখেছে"।
এদিকে ইমরান জামিন পেয়েই পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যত বোমা ফাটান। তিনি দাবি করেন পাক সেনা তাকে ১০ বছর জেলে পচিয়ে মারতে চাইছে। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবার দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেই বড় সড় অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তাকে ফাঁসিয়ে আগামী দশ বছর কারাগারে রাখার পরিকল্পনা করেছে সেনাবাহিনী। পুরো পরিকল্পনা লণ্ডনে বসে করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
জামিন পেয়েই পিটিআই নেতা ইমরান খান বলেন, ‘আমি যখন জেলে ছিলাম, তখন দেশ জুড়ে ইচ্ছাকৃতভাবে হিংসা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগে তাকে ১০ বছর জেলে রাখার পরিকল্পনা করেছে পাক সেনা এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, তার স্ত্রীকেও কারাগারে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে পাক সেনা।
তাঁর স্ত্রীকে জেলে রেখে তাঁকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে হিংসায় উস্কানি দেওয়ার মামলায় তাঁকে ১০ বছর জেলে রাখার পরিকল্পনা করে পাক সেনা। অপসারণের পর এক প্রকার শাহবাজ শরিফ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ইমরান খান।
৭০ বছর বয়সী এই নেতা আরও বলেন, ‘পিটিআই কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মিডিয়াকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে সরকার পিটিআই কর্মীদের কন্ঠ রোধ করার চেষ্টা করেছে’।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ইমরান খান আরও অভিযোগ করেন, ‘সেনাবাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়ি-ঘরে হামলা চালাচ্ছে । পুলিশ নির্লজ্জভাবে বাড়ির মহিলাদের উপর হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি । ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে তারা আমাকে গ্রেফতারিতে বাইরে বেরিয়ে প্রতিবাদ জানাতে না পারে’।
দেশের জনগণকে তার বার্তা দিতে গিয়ে পিটিআই প্রধান বলেছিলেন যে “আমি আমার রক্তের শেষ বিন্দু পর্যন্ত স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে যাব”। তিনি বলেন “সরকারের কাছে মাথা নত করা মানে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিপদ ডেকে আনা”। উল্লেখ্য শুক্রবারই জামিন পান ইমরান খান। তা সত্ত্বেও, তিনি পুনরায় গ্রেফতারের ভয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) প্রাঙ্গণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবস্থান করেন তিনি। পরে শনিবার খান লাহোরে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন।