প্রতিবেশি দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিন্দুদের সম্পর্কে ‘অসম্মানজনক’ মন্তব্যের জেরে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা এবং পাঞ্জাব প্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ফায়াজুল হাসান চৌহান। বিতর্কিত মন্তব্যের পর মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগ করেছেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমসূত্রে খবর, হিন্দুদের নিয়ে ‘অপমান ও উস্কানিমূলক’ মন্তব্যের পর তার ব্যাখ্যা চেয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নির্দেশে ফায়াজুল হাসানকে ডেকে পাঠান পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদার। তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলা হলে ইস্তফাপত্র জমা দেন পাকিস্তানের তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রী। তা গ্রহণ করেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার ১০ দিন পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক সমাবেশে মন্ত্রী ফায়াজুল বেশ কিছু ‘হিন্দু-বিরোধী’ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বক্তব্যের পর শাসক দলের নেতামন্ত্রীসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী পরে বলেন তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী, সেখানকার গণমাধ্যম এবং বায়ুসেনার উদ্দেশ্যে ওই মন্তব্য করেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়কে অসম্মান করার লক্ষ্যে নয়।
আরও পড়ুন, “আমি যোগ্য নই, কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে পারলে তবেই নোবেল”
সূত্রের খবর অনুযায়ী জনসমক্ষে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী আর কোনও পদক্ষেপ নিতে না চাইলেও পাক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই ইস্তফা দিতে হয় ফায়াজুল হাসানকে।
তেহরিক-ই-ইনসাফের অফিসিয়াল টুইটারে প্রসঙ্গের উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, “কোনও সম্প্রদায়ের বিশ্বাসকে ছোট করা আদৌ কোনো নীতি হতে পারে না। সহিষ্ণুতার আদর্শকে ভিত্তি করে পাকিস্তান গড়ে উঠেছে”।
সরকারি এক হিসেব মতে পাকিস্তানে প্রায় ৭৫ লাখ হিন্দু ধর্মের মানুষের বসবাস রয়েছে। তাদের সিংহভাগই বসবাস করেন সিন্ধু প্রদেশে। মন্ত্রীর মন্তব্যের পর সে দেশে বসবাসকারী হিন্দুরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খোলেন।
দলের নেতার বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সরাসরি মুখ না খুললেও প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী নইমুল হক বলেন, ‘সরকার এ ধরনের নির্বুদ্ধিতা সহ্য করবে না।’ একই সঙ্গে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও টুইট বার্তায় জানিয়েছিলেন তিনি।