দেশজুড়ে সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে। উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। একাধিক রাজ্য বিক্ষিপ্তভাবে কোনও এলাকায় বা সার্বিকভাবে গোটা রাজ্যে টানা কয়েকদিন অথবা সপ্তাহে দু-তিনের জন্য লকডাউন জারি করেছে। সংক্রমণের এই বৃদ্ধি গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত বলে মানতে নারাজ কেন্দ্র। সম্প্রতি দেশের করোনা প্রভাবিত প্রথম ৯টি রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। করোনা সংক্রমণ রোধে রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রের গাইডলাইন কঠোরভাবে মেনে চলার কথা বলা হয়। এছাড়াও, নির্দিষ্টভাবে কনটেনমেন্ট জোন, স্বাস্থ পরিকাঠামোতে নজরদারির কথা বলা হয়েছে। সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত রুখতে মোট ৬টি পরামর্শের উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।
* প্রথমত, রাজ্যগুলোকে কেন্দ্রের পরামর্শ, গত ৬ মাস ধরে মহামারীর আবহেই আমরা রয়েছি। সংক্রমণ রুখতে কনটেনমেন্ট, নজরদারি, সংক্রমণের চেন রুখে দেওয়া ও করোনায় মৃত্যুহার কীভাবে কমানো যায় সে সম্পর্কে আমরা সবাই সাম্যক অবহিত।
রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব গৌবা বলেছেন, 'করোনা সংক্রমণ রোখার মূল বিষয়টি আমাদের সবার জানা রয়েছে। এবার বিভিন্ন পদক্ষেপের ভুল শুধরে কীভাবে ভালো করে কার্যকর করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। তাহলেই আশা করা যাচ্ছে সংক্রমণ রোখা সম্ভব।'
* দ্বিতীয়ত, বিক্ষিপ্ত বা এলাগত লকডাউনের সঙ্গেই সঠিক পদ্ধতিতে কনটেনমেন্ট ও কার্যকরী নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করে কেন্দ্র। একই সঙ্গে হাসপাতালের পরিকাঠামো ও ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্টও সমান তালে পোক্ত করতে হবে। সূত্রের খবর, কেন্দ্র জানিয়েছে, 'রাজ্যের পদক্ষেপের বিচার আমরা করব না তবে, দু-তিন দিনের লকডাউনে সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে হয় না।'
* তৃতীয়ত, বর্তমানে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হতাশা বৃদ্ধি পাবে। কাজের প্রতি ক্রমশ আগ্রহ হারাবেন তাঁরা। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোটেশন পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটাতে পরামর্শ দিচ্ছে কেন্দ্র। বিকল্প হিসাবে, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক, এমবিবিএসের শেষ পর্যের পড়ুয়া, স্নাতকস্তরে নার্সিং পড়ুয়াদের কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছে।
* চতুর্থত, বেশ কিছু রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো দুর্বল। সেক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডার, টেস্টিং কিট, ওষুধ মজুত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে দেরি করলে পরিনাম ভয়ঙ্কর হতে পারে। করোনা মোকাবিলার স্বাস্থ্য সরঞ্জাম পেতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় মুখ্যসচিবদের সেদিকে নজর দিতে হবে।
* পঞ্চমত, সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রত্যেক রাজ্যকেই দৃঢ় ও সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে বলে রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।
* ষষ্ঠত, জনতার সঙ্গে কার্যকরী যোগাযোগের লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ করতে হবে।
দেশে একদিনে সংক্রমিতের সংখ্যা গড়ে ৫০ হাজার করে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা তেন রুখতে অন্ধপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, আসাম, উত্তরপ্রদেশ সহ ৯ রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব ররাজীব গৌবা। ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিক ও কেন্দ্র গঠিত কোভিড-১৯ জাতীয় টাস্ক ফোর্সের বিশেষজ্ঞরাও। এই সব রাজ্যে সংক্রমণ বাড়লেও নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সোমবারই ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদী নয়দা, কলকাতা ও মুম্বইতে আইসিএমআর-এর অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরির সূচনা করবে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাননো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন