জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উত্তাল আসাম। এর উপর বারংবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিজেপি সরকারের নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল ২০১৬। এমতাবস্থায় ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির ৬ নম্বর দফা রূপায়নের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই কমিটির শীর্ষে বসানো হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার এম.পি. বেজবড়ুকে। এছাড়া আসামের বিভিন্ন ক্ষেত্রের একাধিক গুণীজনকেও স্থান দেওয়া হয়েছে কমিটিতে।
আসামে নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রাথমিক খসড়ায় বাদ গিয়েছে বহু মানুষের নাম। এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা কয়েক প্রজন্ম ধরে বাসবাস করছেন রাজ্যটির ভৌগলিক সীমানার মধ্যে। এরপরও খসড়ায় নাম ওঠেনি অনেকের। দেখা যাচ্ছে, কোথাও একই পরিবারের কয়েকজনের নাম পঞ্জির খসড়ায় স্থান পেলেও বাদ গিয়েছেন অন্যান্য সদস্যরা। সব মিলিয়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে এই মুহূর্তে নাগরিকত্ব নিয়ে চূড়ান্ত আশঙ্কায় বহু মানুষ। আর এর ফলেই দেশ জোড়া বিতর্কের মুখে পড়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপর আবার গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো সামনে এসেছে নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল ২০১৬। এই বিল অনুযায়ী, তিন প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসামে আগত (অমুসলিম) উদবাস্তুদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বিজেপি সরকারের এই বিল নিয়েও তুমুল বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। আর ঠিক এই সময় ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির ৬ নম্বর দফা রূপায়নের বিষয়ে কমিটি গড়ল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির ৬ নম্বর দফা কী?
আসামের জণগনের সাংস্কৃতিক, সামাজিক, ভাষাগত পরিচয় এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির ৬ নম্বর দফায়। এবার সেই ষষ্ঠ দফাটির রপায়নের বিষয়েই কমিটি গড়ল কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই কমিটি ষষ্ঠ দফা রূপায়নের জন্য ১৯৮৫ সাল থেকে নেওয়া পদক্ষেপের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করবে। আসামে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলবে এই কমিটি। এছাড়া আসাম বিধানসভা, সে রাজ্যের সরকারি চাকরি এবং আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনাধীন সংস্থাগুলিতে (পৌরসভা, পঞ্চায়েত) সংরক্ষণের মানও বিবেচনা করে দেখবে এই কমিটি। অহমিয়া-সহ আসামের অন্যান্য ভাষার সংরক্ষেণের দিকটিও নজরে রাখবে কমিটি। এর পাশাপাশি, ২০০৩ সালে ঘটা আসাম সরকার-কেন্দ্রীয় সরকার-বোরো লিবারেশন টাইগার্স ফোর্সের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তির নিরিখে বোরোদের ইস্যুগুলিও খতিয়ে দেখবে এই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গড়া এই কমিটিতে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার সুভাষ দাস, আসাম সাহিত্য সভার প্রাক্তন সভাপতি ডঃ নগেন সাইকিয়া, প্রাক্তন সম্পাদক ধীরেন বেজবড়ুয়া, শিক্ষাবিদ মুকুনা রাজবংশী প্রমুখ।
Read the full story in English