লাদাখ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ধীরে ধীরে উভয় দেশের সেনা সরছে ও উত্তেজনার পরিস্থিতি ক্রমশ প্রশমণের দিকে এগোচ্ছে। সম্প্রতি চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই দাবি করা হয়। কিন্তু, বাস্তব অবস্থা যে ভিন্ন ভারতীয় সেনা সূত্রে মেলা খবরেই তা স্পষ্ট। বিগত দু'সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভারত-চিন বিরোধের অন্যতম প্যানংগং ও গোগরার ১৭-এ পেট্রোলিং পয়েন্ট থেকে লাল ফৌজ সরার ক্ষেত্রে কোনও সদর্থক অগ্রগতি নেই বলে জানা গিয়েছে।
ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্যাংগংকে এখনও চিনা সেনা রয়েছে। একই অবস্থা গোগরার ১৭-এ পেট্রোলিং পয়েন্টেও। ভারত-চিন সীমান্ত বিরোধ প্রশমণে উভয় দেশের সেনা কমান্ডার ও কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আগামী কয়েকদিনেই ফের আলোচনায় বসতে পারে দু'দেশের সেনা। সেই বৈঠকে এই দুই অঞ্চল থেকে চিনা সেনা সরানোর বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেবে ভারতীয় সেনা। মনে করা হচ্ছে সপ্তাহান্তে ভারত-চিন সেনা পর্যায়ে আলোচনা হতে পারে, তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়ননি।
চিনা জাতীয় সুরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র সিনিয়ার কলোনেল রেন গৌকিয়াঙ্গ বৃহস্পতিবারই বলেছেন যে, 'গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকেই চিন ও ভারত সেনা ও কূটনৈতিক পর্যায়ে কার্যকরী আলোচনা চালাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে দু'দেশের সেনা সরছে ও পরিস্থিতি প্রশমণের দিকে এগোচ্ছে।' এরপরই তাঁর সংযোজন, 'আশা করব পারস্পরিক সহযোগিতা, দু'দেশের উন্নতি ও ওই অঞ্চলের শান্তির কথা বিবেচনা করে ভারত পদক্ষেপ করবে। উভয় দেশের সেনা সহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে সঠিক দিশায় এগিয়ে যাবে।'
রেন গৌকিয়াঙ্গয়ের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা যায় যে, প্যানংগং ও গোগরার ১৭-এ পেট্রোলিং পয়েন্ট থেকে লাল ফৌজ আর সরেনি। দেপসাংয়ের অবস্থারও বদল ঘটেনি। এখানে ভারতীয় সেনাকে চিনা বাহিনী নজরদারি করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গত ১৪ জুলাই চুশুল মল্ডতে নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ভারত-চিন সেনা কমান্ডোস্তরে চতুর্থ দফার আলোচনা হয়েছিল। সেই থেকে অচলাবস্থা জারি রয়েছে।
ভারত চিন বিরোধ নিয়ন্ত্রণরেখায় চার জায়গায়। এগুলি হল, গালওয়ানের পিপি-১৪, হট স্প্রিংয়ের পিপি-১৫, গোগরা পোস্টের পিপি ১৭-এ ও প্যাংগংয়ের পিপি-৪। সূত্র জানাচ্ছে, ৩০ জুন উভয় দেশের সেনা পর্যায়ের তৃতীয় পর্যায়ের বৈঠকের পর চারটির মধ্যে দুটি জায়গা গালওয়ান ও হট স্প্রিং থেকে ভারত-চিন সেনা সরেছে। কিন্তু, এখনও পিপি ১৭-এ এবং প্যাংগং থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। পিপি-এ অঞ্চলের এক কিমির মধ্যেই উভয় দেশের ৫০ ট্রুপ সেনা মোতায়ের রয়েছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন