সংঘাতের জট কেটেছে। ইতিমধ্যেই উভয় দেশের সহমতের ভিত্তিতে প্যাংগং হ্রদের উত্তর এবং দক্ষিণ অংশ থেকে সেনা সরানোর কাজ সম্পন্ন করেছে ভারত ও চিন। এই পরিস্থিতিতে আজ, ফের বৈঠকে বসছে প্রতিবেশী দুই দেশের সেনা কমান্ডাররা। প্যাংগং ছাড়াও সীমান্তের অন্য যে জায়গাগুলো নিয়ে ভারত-চিনের বিবাদ রয়েছে, বৈঠকে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে খবর। আলোচনায় উঠে আসতে পারে দেপসাং সমতল এবং গোগরা-হট স্প্রিং অঞ্চল।
ভারতীয় এক শীর্ষ সেনা অফিসার জানিয়েছেন, বুধবারই প্যাংগং এলাকা থেকে দুই দেশের সমরাস্ত্র, সেনা ট্যাংক ও বাহিনী সরে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ সরজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তাঁর কথায়, 'গত ২৪ জানুয়ারি ভারত-চিন সেনা পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে প্যাংগং থেকে দুই দেশের সেনা প্রত্যাহারের বিষয় আলোচনা হয়। তারই ফল মিলেছে। প্যাংগংয়ের পরিস্থিতি ফের আগের অবস্থায় ফিরেছে। লাল ফৌজ ফিঙ্গার-৮ এর পূর্ব দিকে সরে গিয়েছে। ভারতীয় বাহিনী ফিঙ্গার-৩ এর ধান সিং পোস্টে অবস্থান করছে। এই অঞ্চলে চিনা সেনার তৈরি অস্থায়ী সব নির্মাণ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।' এছাড়াও তাঁর সংযোজন, 'চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় সেনা প্যাংগংয়ের দক্ষিণে রেচিং ও রেজং এলাকা ফাঁকা করে দিয়েছে। সেনা সরানোয় ক্ষেত্রে চিন তৎপরতা দেখিয়েছে যা অপ্রত্যাশিত। উভয় দেশের এই মনোভাবই শনিবারের বৈঠক থেকে সদর্থক ফলাফলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।'
সীমান্ত সমস্যা আজ সকাল ১০টায় দশম পর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত -চিন। চুশুল সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে মলডোতে আলোচনা হবে দুই দেশের সেনা আধিকারিকদের মধ্যে। উপস্থিত থাকবেন দু’দেশের সেনার শীর্ষ আধিকারিকরা। গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সংসদে প্যাংগং থেকে ভারত-চিন সেনা সরানোর বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেছিলেন, 'সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দুই দেশের সেনা কর্তারা বৈঠকে বসবেন। সেখানে বাকি যেসব এলাকা নিয়ে ভারত-চিন বিরোধ রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা হবে।'
চিনের সঙ্গে দর কষাকষিতে ভারতের তুরুপের তাস ছিল প্যাংগং। তাই সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন এলকাতেই বিশেষ জোর দেওয়া হয়। এতদিন লাদাখের দেপসাং সমতল, গোগরা-হটস্প্রিং নিয়ে তেমন কোনও আলোচনাই হয়নি। জানা গিয়েছে এবার সেই নিয়েই আলোচনায় বসছেন চিন-ভারতের সেনা কর্তারা। এছাড়াও আলোচনায় উঠতে পারে দেমচকের সিএনএন এলাকা (চারদিং-নিঙ্গগুলা-নাল্লাহ)। এই অঞ্চলে গত তিন বছর ধরে ভারতীয় সেনাদের টহলে লালা ফৌজ বাধা সৃষ্টি করছে বলে দাবি সেনা অফইসারের। তবে, শুধু দশম রাউন্ডের বৈঠকেই সমস্যা মিটবে না, বরফ গলাতে আরও বেশ রাউন্ড বৈঠকের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন ভারতীয় সেনা কর্তারা।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন