কূটনৈতি ও সেনা পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে ভারত-চিন সীমান্ত বিরোধ মেটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে সেনা সরিয়েছে চিন। একই পদক্ষেপ করেছে ভারতও। কিন্তু, নিয়ন্ত্রণরেখায় প্যাংগন অঞ্চল নিয়ে জটিলতা এখনও অব্যাহত। ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, প্যাংগং হ্রদের পরিস্থিতি এখনও বদলায়নি। বরং সেখানে পাথরের বাঙ্কার তৈরি করতে শুরু করেছে চিনা সেনা। যা ভারতের মাথা ব্যাথার অন্যতম কারণ বলেও মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় সেনা সূত্রে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে যে, প্রকত নিয়ন্ত্রণরেখায় অন্যান্য অঞ্চলে নিয়ে ভারতে যুক্তি চিন মেনে নিয়েছে। তবে, প্যাংগন নিয়ে এখনও তাদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ৬ই জুন উভয় দেশের সেনা কমান্ডার পর্যায়ের যে আলোচনা হয়েছিল সেখানেও প্যাংগংকে কেন্দ্র করেই মতপার্থক্য দেখা গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে কেন্দ্র করে ভারত-চিন সীমান্ত বিরোধ তুঙ্গে। গত ৫ ও ৬ই মে নিয়ন্ত্রণরেখার এপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্যাংগংয়ে দুই দেশের সেনারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। এরপরই এলএসি-র ওপারে চিনের সমরাস্ত্র ও সেনা মজুত বৃদ্ধির পাল্টা ভারতও বাহিনী সংখ্যা বাড়াতে থাকে। গত মাসে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ঘিরে ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। তারপর তা প্রশমণের উদ্য়োগ নেয় উভয় দেশ। আলোচনা এগোলেও প্য়াংগংয়ের পরিস্থিতি অবিচল রয়েছে। সেখানে ভারত-চিন সেনারা মুখোমুখি অবস্থান করছে। ওই অঞ্চলে ভারতীয় সেনাদের নজরদারিও থমকে রয়েছে।
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে ফিঙ্গার ৪ থেকে ৮ পর্যন্ত অঞ্চলে চিনা সেনাদের উপস্থিতি নজরে আসে। গত ২৭ মে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে সেই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই অঞ্চলে আগে দু'দেশের সেনা নজরদারি চালালেও বর্তমানে ভারতীয় সেনাকে নজরদারিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে ওই অঞ্চলে ভারতীয় সেনাদের নজরদারি থমকে রয়েছে। এর সমাধান চায় দিল্লি।
ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, গত বছর আগাস্ট ও সেপ্টেম্বরে একাধিকবার চিনা সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পাড় করে ফিঙ্গার ৮ দিয়ে এ দেশে প্রবেশ করে। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতীয় সেনারা অন্য পথে ফিঙ্গার ৮-এ পৌঁছনোর চেষ্টা করে। এতে আপত্তি জানায় চিন। ওই অঞ্চলে দীর্ঘ সময়ে কর্মরত সেনার এক প্রাক্তন অফিসারের মতে, ওই অঞ্চলে উভয় পক্ষই একে অপরের নজরদারিতে বিরত করার চেষ্টা করবে - সেটা অস্বাভাবিক নয়। ভারতীয় সেনার উদ্দেশ্য হবে ফিঙ্গার ৮-এ পৌঁছান। অপরদিকে চিনাদের লক্ষ্য থাকবে ফিঙ্গার ৪-এ পৌঁছান। কিন্তু বর্তমানে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ ছাড়া সহ রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে।
এই আবহেই লাদাখের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে দু’বার লাদাখ নিয়ে বৈঠক করলেন তিনি। রাজনাথকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত, সেনা প্রধান নারাভনে, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল কারাম্বির সিং ও বায়ুসেনা প্রধান।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন