লোকসভায় নাটকীয়ভাবে স্মো-ক্যান তাণ্ডবকারী মনোরঞ্জন দেবরাজের (৩৩) কর্মকাণ্ড শুধু ভারতেই নয়, বিদেশেও বিস্তৃত। তদন্তে জানা গিয়েছে, পূর্বে কম্বোডিয়ায় কাজ করতেন মনোরঞ্জন। স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করতেন তিনি। ইঞ্জিয়ারিং পাঠ্যক্রম মাঝপথে ছেড়ে কম্বোডিয়ায় গিয়ে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করতেন মনোরঞ্জন দেবরাজ।
১৩ তারিখ সংসদের হামলার পরই মনোরঞ্জনের মহীশুরের বাড়িতে হাজির হয়েছিল গোয়েন্দা দল। সেখান থেকে তাঁর ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়াও তাঁর কাজের সব নথিও উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকেই জানাজানি হয় যে, মনোরঞ্জন অতীতে কম্বোডিয়ায় গিয়েছিলেন। নথি অনুযায়ী ২০১৪ সালে ব্যাঙ্কক হয়ে কম্বোডিয়ায় গিয়েছিলেন এই ধৃত।
সূত্র জানাচ্ছে যে, মনোরঞ্জনের পরিবারের দাবি- 'রাষ্ট্রসংঘের মত কোনও সংস্থার হয়ে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করার জন্য বিদেশে গিয়েছেল ছেলে। যা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন।' তবে, নথি অনুযায়ী, এখনও মাত্র একবারই মাত্র বিদেশ ভ্রমন করেছেন মনোরঞ্জন। এর মাধ্যমেই তদন্তকারী দল সংসদ হামলায় ধৃত মনোরঞ্জনের রাজনৈতিক আদর্শের সংক্রান্ত বিষয়টির ইঙ্গিত পেতে মরিয়া।
পরিবারের দাবি অনুসারে, মনোরঞ্জন দেবরাজ সামাজিকভাবে সচেতন ব্যক্তি। সমাজের সেবাই তাঁর ব্রত। ফলে বেকার হলেও ছেলে নিয়ে কোনওদিনই বিরক্ত বা হতাশ ছিলেন না। মনোরঞ্জনকে পরিবারের লোকেরা সবসময়ই বই ও সেবার কাজে নিমগ্ন থাকতে দেখেছেন। ধৃতের বাবা দেবরাজ গৌদার কথায়, 'মনোরঞ্জন সবসমই বই পড়ত। বিশেষ করে স্বামী বিবেকানন্দের। ওর রাজনৈতিক যোগ নিয়ে কিছু জানি না। ও ছাত্র নেতা ছিল, সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখত।'
আরও পড়ুন- দেশের সংবাদ জগতে ফের বড় থাবা আদানিদের, NDTV-র পর এবার কী?
মনোরঞ্জনের পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে যে, সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় আরেকজন অভিযুক্ত সাগর শর্মা একটি অনুষ্ঠানে ছেলের সঙ্গে বাড়িতে এসেছিলেন। মনোরঞ্জন মুখচোরা ছিল, মহীশুরের বন্ধু ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে তেমনভাবে মেলামেশা করতেন না।
মহীশুরের বিজয়ানগরে ধৃতের প্রতিবেশী কেএস শিল্পার কথায়, 'ও খুবই চুপচাপ থাকত এবং দীর্ঘদিন ধরে আমরা জানতামই না যে সে দেবরাজের ছেলে। ওর বাবা বলতেন যে, ছেলে বিই স্নাতক এবং সে বিদেশে চাকরি করে।'
পুলিশের ধারণা, মহীশুর-কোডাগু কেন্দ্রের বাসিন্দা হওয়ায় মনোরঞ্জন বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার থেকে সংসদের ভিজিটর পাস সংগ্রহ করেছিলেন। জাতিতে ভোক্কালিঙ্গা হওয়ায় সাংসদও তাঁকে দ্রুত পাস দিয়েছিলেন।
পুলিশের দাবি, মহীশুরুরের বাইরে কর্নাটকের হাসানে পারিবারিক ১০ একর জমির দেখভাল করতেন মনোরঞ্জন দেবরাজ। মনোরঞ্জন সেন্ট জোসেফ স্কুলে এবং পিইউসি মাইসুরুর মারিমাল্লাপ্পা কলেজে পড়েছিলেন। তিনি ব্যাঙ্গালোর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (বিআইটি) একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে কোর্সটি সম্পূর্ণ করেননি বলে জানিয়েছেন বিআইটির অধ্যক্ষ ডঃ এমইউ অশ্বথ।