মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করতে উদ্যোগী কেন্দ্র। এই লক্ষ্যে লোকসভায় গত শীতকালীন অধিবেশনে পেশ করা হয় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ (সংশোধীত) আইন ২০২১। তারপরই
প্রস্তাবিত বিলটি পর্যালোচনার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে (শিক্ষা, নারী ও শিশু কল্যাণ, যুব ও ক্রীড়া সম্পর্কিত) পাঠানো হয়েছে। দেখা যাচ্ছে ওই স্থায়ী কমিটির মোট ৩১ জন সদস্যের মধ্যে মহিলা সদস্য রয়েছেন মাত্র ১ জন। সেই মহিলা সদস্য হলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খতিয়ে দেখতে ৩১ জনের মধ্যে কেন মাত্রা ১ জন মগিলা সদস্য? তা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে কী মনে করছেন সাংসদ সুস্মিতা দেব? তাঁর জবাব, 'আরও বেশি মহিলা সাংসদ স্থায়ী কমিটিতে থাকলে ভালো হত। তবে এটা নিশ্চিৎ করছি যে আমরা এই বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত যাবতীয় গোষ্ঠীর কথা শুনবো।'
সংসদে মহিলা কেন্দ্রীক নানা ইস্যু তুলে ধরেন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেসের সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে। তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের বিয়ের বয়স ন্যূনতম কত হতে পারে তা একেবারেই মহিলা সম্পর্কিত ইস্যু। তাই কমিটিতে আরও মহিলা সাংসদদের উপস্থিতি প্রয়োজন ছিল। তাঁর সংযোজন, কমিটির চেয়ারম্যানের অন্যান্য়দের আমন্ত্রণ জানানোর ক্ষমতা রয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনার জন্য চেয়ারম্যান অন্যান্য মহিলা সাংসদদের আমন্ত্রণ জানাতেই পারেন।
যে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ (সংশোধীত) আইন ২০২১ পর্যালোচনার করবে তার চেয়ারম্যান বিজেপি সাংসদ বিনয় সহস্রবুদ্ধে।
২০২০ সালের জুন মাসে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক গঠিত জয়া জেটলি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মেয়েদের বিয়ের ন্যূতম বয়স বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয় কেন্দ্র। এপ্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, জয়া জেটলি জানিয়েছেন যে, প্রস্তাবিত আইনটি পর্যালোচনার জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ৫০ শতাংশ মহিনা না হলে তা ন্যায়সঙ্গত হবে না। জেটলির কথায়, 'পারলে আমি সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুরোধ করব বিশেষ করে যারা মহিলা সংরক্ষণের পক্ষে, কমিটি থেকে পুরুষ সাংসদদের বদলে মহিলা সাংসদের অন্তর্ভুক্তি করুন। কারণ এক্ষেত্রে মহিলাদের নানাস্তরে আলোচনা প্রয়োজন।'
স্থায়ী কমিটিতে কোন দলের কত জন সদস্য থাকবেন তা নির্ধারিত হয় সংসদে ওই দলের সাংসদ সংখ্যার উপর ভিত্তি করে।
কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে হওয়ার ফলে অনেকেই পড়াশোনা শেষ করা বা চাকরিতে যোগ দেওয়ার মতো বিষয়গুলি থেকে পিছিয়ে থাকে। আবার, কম বয়স থেকেই মা হওয়ার তোড়জোড়ও শুরু হয়ে যায়। যার ফলে তাদের সন্তান সংখ্যাও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেশি হয়। কম বয়সে বিয়ে হওয়ায় বহু মেয়ের স্বাস্থ্যহানিও ঘটে। ফলে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স কত হওয়া উচিত তা নিয়ে কেন্দ্র সরকারের অন্দরে বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা আলোচনা চলছিল। যার ফলশ্রুতি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ (সংশোধীত) আইন ২০২১ বিল।
একদিকে মেয়েদের আত্মনির্ভর করা, অন্যদিকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণই প্রস্তাবিত আইনের লক্ষ্য বলে মে করা হচ্ছে।