জাতপাতের নামে মানসিক নির্যাতন এবং হেনস্থায় জীবনের চরমতম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হল মুম্বইয়ের চিকিৎসক পায়েল তাড়ভিকে। মহারাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রী গিরিশ মহাজন মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছেন যে ২৬ বছরের পায়েলের মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যাই, তবে এক্ষেত্রে সিনিয়র ডাক্তারদের পায়েলের উপর ক্রমাগত নিগ্রহ এবং বৈষম্যমূলক মন্তব্যের জেরেই এই তরুণী ডাক্তার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। মন্ত্রীর তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়, অভিযুক্ত ডাক্তারদের শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে।
Maharashtra medical education minister Girish Mahajan assures arrest of three accused doctors in suicide case of Dr Payal Tadvi in Nair hospital. Anti ragging report out, Mahajan says evidence found of targetted harassment and caste remarks by seniors @IndianExpress
— Tabassum (@tabassum_b) May 28, 2019
ঠিক কী হয়েছিল?
বছর ছাব্বিশের পায়েল ছিলেন মুম্বাইয়ের বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী। তীব্র জাতিবিদ্বেষ এবং দিনের পর দিন সিনিয়র তথা সহকর্মীদের দ্বারা হেনস্থায় অপমানিত পায়েল আত্মঘাতী হন। হোস্টেলের ঘরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
প্রতিবাদের শুরু সেখান থেকেই। বঞ্চিত বহুজন আগাড়ি দল এবং অন্যান্য দলিত, উপজাতি সম্প্রদায়েরা মিলিতভাবে পায়েলের মা আবিদা এবং বাবা সলমনের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই মুহুর্তে তাঁদের পরিবারের একটাই দাবি - যাঁদের নিগ্রহে, অপমানে, মানসিক অত্যাচারেই সম্ভবত পায়েল নিজের জীবন শেষ করে দিয়েছেন, তাঁদের শাস্তি।
বিক্ষোভকারী এবং তাড়ভি পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে ভীম সেনা প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ জানান, "ছোট বোন" কে ন্যায়বিচার দেওয়ার লড়াইয়ে প্রয়োজনে তিনি মহারাষ্ট্রে যাবেন। মহারাষ্ট্রের মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে 'অ্যান্টি র্যাগিং' আইনে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সমস্ত বিষয়টি পর্যালোচনা করে অ্যান্টি র্যাগিং আইন বাস্তবায়ন করে আট দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
এই ঘটনায় সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছেন পায়েলের পরিবার। পায়েলের বাবা সলমনের দাবি, পুলিশ এই ঘটনায় কোনও রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি। হাসপাতালের তিনজন মহিলা ডাক্তারের দিকেই মূলত অভিযোগের আঙুল তুলছেন পায়েলের পরিবার। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান এবং তিনজন রেসিডেন্ট ডাক্তারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। হেমা আহুজা, অঙ্কিতা খান্ডেলওয়াল এবং ভক্তি মেহারে, এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও ঘটনার পর থেকেই এঁরা পলাতক। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এঁদের ধরতে অনুসন্ধানকারী দল পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, যেভাবে অপমানিত, অপদস্থ করা হচ্ছিল পায়েলকে, তার সুরাহা চেয়ে পায়েল ও তাঁর পরিবার মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ করেন, কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেন নি কর্তৃপক্ষ, এমনই অভিযোগ পায়েলের পরিবারের। কিন্তু সেই অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতালের ডিন ডা. আর এন ভার্মাল। তিনি বলেন, তাঁর কাছে এমন কোনও ধরনের অভিযোগ জমা পড়ে নি। কিন্তু শোকে কাতর আবিদার প্রশ্ন, অভিযোগ জানালে ডিন-এর অফিসের স্ট্যাম্প দিয়েই চিঠি গ্রহন করা হয়, কিন্তু তারপরেও কেন এই অস্বীকার?
Read the full story in English