ইসরায়েলি স্পাইওয়ার পেগাসাস আক্রান্ত ১৯ জন অধিকার কর্মী, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং ছাত্র সরকারের কাছে জবাবদিহি চেয়ে খোলা চিঠি লিখেছেন। হোয়াটসঅ্যাপ এঁদের সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছিল হয় তাঁদের ফোন হ্যাক হয়েছে নয়ত তাঁদের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে।
Advertisment
চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, "আমরা অজ্ঞাতপরিচয়ের নজরদারির আওতায় রয়েছি এবং আমাদের অন্তরঙ্গ বিষয়, ব্যক্তিগত কথোপকথন, আর্থিক লেনদেনের উপর চরবৃত্তি চালানো হচ্ছে এ কথা আমরা জেনে ফেলেছি যা খুবই অস্বস্তিকর। এ শুধু আমাদের গোপনীয়তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন নয়, শুধু আমাদের নিরাপত্তার সঙ্গে ছেলেখেলা নয়, একই সঙ্গে আমাদের পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী, সূত্র ও অন্যান্যদের অধিকার ও নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হচ্ছে।"
"এ ধরনের ব্যাপক নজরদারি গোটা সমাজের কাছে ভয় ধরিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট এবং ভাবনা ও মত বিনিময়ের আমাদের যে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, তার পরিপন্থী।"
সরকারের কাছে এই আক্রমণের তথ্য প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, "ভারতের করদাতাদের অর্থ সাইবার নজরদারিতে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা তা জনগণের উদ্বেগের বিষয়, কারণ এ ধরনের নজরদারির জন্য বহু কোটি টাকা প্রয়োজন এবং একইসঙ্গে তথ্য প্রযুক্তিতে ব্যাপক পরিকাঠামোরও দরকার।"
চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, "আন্তর্জাতিক বেসরকারি কর্পোরেশন এবং অন্যান্য বিদেশি সংস্থা আমাদের টেলিকমিউনিকেশন মাধ্যমের সর্বস্তরে প্রবেশ করেছে এবং বহুল পরিমাণ ভারতীয় নাগরিকদের বহু অন্তরঙ্গ তথ্য তাদের কাছে রয়েছে যা আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্বকে বিপদের মুখে ফেলেছে।"
পত্রলেখকরা জানতে চেয়েছেন সরকার এনএসও গোষ্ঠীর সঙ্গে কোনও মন্ত্রক বা কোনও রাজ্য সরকারের কোনও রকম চুক্তি সম্পর্কে অবগত কি না। "যদি তেমনটা হয়, তাহলে এ ধরনের চুক্তির বিবরণ এবং তার পূর্ণ মূল্য এবং চুক্তিবদ্ধ সংস্থার বিষয় প্রকাশ্যে আনা উচিত। কী ধরনের তথ্যের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছিল সে কথাও প্রকাশ করা হোক।"
এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন আইনজীবী মনদীপ আজমল খান, আলোক শুক্লা, অঙ্কিত গ্রেওয়াল, আশিস গুপ্তা, রবীন্দ্রনাথ বল্লা, বেলা ভাটিয়া, ডিগ্রি প্রসাদ চৌহান, দেবিকা মেনন, জগদীশ মেশরাম, নিহালসিং রাঠোর, নিকিতা আগরওয়াল, রুপালি যাদব, সীমা আজাদ, শালিনী গেরা, শুভ্রাংশু চৌধুরী, বিদ্যা এবং বীরা সতীধর।
চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, "যদি সত্যিই ভারত সরকারের কাছে এ ধরনের নজরদারির কোনও খবর না থাকে, তাহলে অপরাধীদের চিহ্নিত করার জন্য এবং ভবিষ্যতে আমাদের টেলিকমিউনিকেশন যোগাযোগ নিরাপদ করার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা জানার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ভারতীয় জনগণের।"