পেগাসাস স্পাই ওয়্যার বিতর্কে উত্তাল দেশ। প্রশ্নের মুখে ব্যক্তি স্বাধীনতা। তার মাঝেই বোমা ফাটালেন ভারতের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ণের সরকারি কমিটির প্রধান তথা সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণ। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ জানিয়েছেন যে, বেসরকারি সংস্থার মতো ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনের কবলে সরকারও পড়ে। আইন সংঘন হলে সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে পেগাসাস বিতর্ক। এনিয়েই দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, 'তথ্য সুরক্ষা নিয়ে যে আইন রয়েছে তাতে বেসপরকারি সংস্থার পাশাপাশি সরকারও অন্তর্ভুক্ত। আইন সংঘন বলে সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। কোনও তথ্যের দরকার হলে সরকারকে নিয়ম মেনে সংসদে বিধি আনতে হবে।'
আরও পড়ুন- শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ, গোটা বাদল অধিবেশনের জন্য রাজ্যসভায় সাসপেন্ড তৃণমূল সাংসদ
গোপনীয়তা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার, কিন্তু তা লংঘন হলে যারা ভুক্তভোগী অর্থাৎ এক্ষেত্রে যাঁদের ফোনে পেগাসাস স্পাই ওয়্যার ব্যবহার করে আড়ি পাতা হয়েছে তাঁদের সুপ্রিম কোর্টে এখনই মামলা করা উচিত। এমনটাই মত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণের।
তিনি বলেছেন, 'আইন লংঘন হয়েছে কিনা তা সরকারই একমাত্র জবাবদিহি করতে পারে। ফলে যাঁরা ভুক্তভোগ তাঁরা সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে এখনই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে পারেন। বিষয়টি তাহলে সবরা নজরে পড়বে। কারণ সংবিধানের ২১ ধারা অনুসারে ব্যক্তির গোপনীয়তা রক্ষা মোলিক অধিকারের আওতাধীন।' উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে কেন্দ্র-বিচারপতি কে এস পুট্টাস্বামী মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্টের ৯ বিচারপতির বেঞ্চ গোপনীয়তার আধিকারকে মৌলিক বলে গণ্য করেছিলেন।
কেন্দ্র পেগাসাস আড়ি পাতাকাণ্ডের দায় অস্বীকার করেছে। এক্ষেত্রে ফ্রান্সের মতো ভারত সরকারও উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন দেশের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ণের সরকারি কমিটির প্রধান তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ।
ভারতে দ্য ওয়্যার ওয়েব পোর্টাল গত রবিবার রাতে পেগাসাস স্পাই ওয়্যারের ফোনে আড়ি পাতাকাণ্ডটি সামনে আনে। রিপোর্টে উল্লেখ, দেশের দুই মন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা, আমলা, সাংবিধানিক পদে কর্মরত ব্যক্তি, বিচারপতি, সাংবাদিকদের মোবাইলের তথ্য পেগাসাস স্পাই ওয়্যার দিয়ে নজরদারি চলেছে। ইজরাইলি সংস্থা প্রায় ৫০ হাজার ভেরিফায়েড মোবাইল নম্বরকে আড়িপাতার জন্য নিশানা করেছিল বলে দাবি দ্য ওয়্যারের। সম্প্রতি এনএসও তথ্যভাণ্ডার ফাঁস হয়ে যায়। যা প্রথম হাতে আসে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও ব্রিটেনের অলাভজনক সংস্থা ফরবিডেন স্টোরিজের।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন