Advertisment

২০ মাসের শিশুকন্যার চোখে পেলেট, দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা

বিলাপ করছিলেন মারসালা। ‘‘ওর কী দোষ? ও তো কিছু বোঝে না। ওর কী হয়ে গেল... আমি প্রার্থনা করছি যারা এর জন্য দায়ী তাদের ঈশ্বর ভয়ানক শাস্তি দিক।’’

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দৃষ্টশক্তি ফিরবে কিনা সংশয়ে চিকিৎসকরাও

শ্রীনগরের শ্রী মহারাজা হরিসিং হাসপাতাল। চক্ষুবিভাগের ৪ নং বেড। ক্রমাগাত কেঁদেই চলেছে হিবা নিসার। তার বাবা মা হিবাকে চকোলেট আর মিষ্টি দিয়ে ভোলানোর চেষ্টা করছেন বটে, কিন্তু ব্যর্থ হচ্ছেন। হিবার বয়স ২০ মাস। রবিবার শোপিয়ানে নিজের বাড়ির মধ্যেই ছিল সে যখন তার ডান চোখে পেলেট এসে লাগে। সঙ্গে সঙ্গেই অপারেশন করা হলেও ডাক্তারদের বক্তব্য, হিবার চোখের ক্ষত মারাত্মক। এক চোখের দৃষ্টিশক্তিও হারাতে পারে সে।

Advertisment

শোপিয়ানে রবিবার সকাল থেকেই এলাকাবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে নিরাপত্তারক্ষীদের। একটি রিপোর্ট অনুসারে হিবার আহত হওয়ার ঘটনার পরে যে বিক্ষোভ শুরু হয়, তার জেরে একজন সাধারণ নাগরিক মারা গেছেন এবং ৫০ জন আহত হয়েছেন।

হিবার মা মারসালা জান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, যখন বিক্ষোভ শুরু হয় তখন তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ির মধ্যেই ছিলেন তিনি। হাসপাতালে হিবাকে কোলে নিয়ে তিনি বললেন, ‘‘আমরা বাড়ির মধ্যে ছিলাম। বাইরে প্রচুর কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হচ্ছিল। কিছুক্ষণ পরে আমার পাঁচ বছরের ছেলে বলে খুব শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। তখন আমি বাচ্চাদের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য দরজা খুলি। দরজা খোলা মাত্রই তিনজন নিরাপত্তাবাহিনীর লোক আমাদের দিকে সরাসরি পেলেট ছোড়ে।’’ ওঁদের পরিবার থাকে শোপিয়ান জেলার বাটগুণ্ড গ্রামে। এখানেই রবিবার সকালে সংঘর্ষ বাধে। আহত ২০ মাসের হিবাকে প্রথমো শোপিয়ান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে শ্রীনগরে রেফার করা হয়।

সন্তানদের বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন মারসালা জান নিজেও। ‘‘আমি হাত দিয়ে হিবার মুখ ঢেকেছিলাম। না হলে পেলেটে ওর মুখ ঝাঁঝরা হয়ে যেত।’’ তাঁর হাতে পেলেটের আঘাত লেগেছে।

বাড়িতে ছেলেকে রেখেই আসতে হয়েছে তাঁদের। শোপিয়ানে আত্মীয়দের ফোন করে নিজের ছেলের  খোঁজ নিতে বলছিলেন নিসার আহমেদ, ‘‘ওর মুখ আর গায়ে কোথাও পেলেট লেগেছি কি না একটু ভাল করে দেখো।’’

নিসার বললেন, ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে এক পাশে সরিয়ে দিয়েছিলেন মারসালা, যে কারণে ছেলে বেঁচে গেছে। ‘‘ওরা একটা ছোট বাচ্চাকেও ছাড়ল না... আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি মেয়েটার চোখে যেন বড় কিছু না হয়ে যায়।’’

শ্রী মহারাজা হরি সিং হাসপাতালের এক চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বললেন, ‘‘বাচ্চাটার অবস্থা ভাল নয়। আমরাও আশঙ্কার মধ্যে রয়েছি, ও কেমন ভাবে সাড়া দেয় তার ওপর সব নির্ভর করছে।’’

বিলাপ করছিলেন মারসালা। ‘‘ওর কী দোষ? ও তো কিছু বোঝে না। ওর কী হয়ে গেল... আমি প্রার্থনা করছি যারা এর জন্য দায়ী তাদের ঈশ্বর ভয়ানক শাস্তি দিক। একজন মা হিসেবে আমি জানি, ওর কত কষ্ট হচ্ছে।’’

Read the Full Story in English

jammu and kashmir
Advertisment