ভাঙড়: রাস্তার উপরে রাশি রাশি নোট। আবর্জনায় আঁতিপাঁতি খুঁজে চলেছেন অসংখ্য মানুষ। সাইকেল, মোটরবাইক থেকে নেমে হুমড়ি খেয়ে রাস্তায় বসে পড়ে হাতড়াচ্ছেন অনেকে। কেন? হয়তো পেয়ে যেতে পারেন এক বান্ডিল নোট । বৃহস্পতিবার এই নোট জোগাড় করা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল ভাঙড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃ্স্পতিবার সকাল ৯ টা নাগাদ একটি লাল রঙের মারুতি ভ্যান নিউটাউন থেকে বাগজোলা খাল পাড়ের নির্জন রাস্তা ধরে ভাঙড়ের দিকে যাচ্ছিল। হঠাত গাড়িটি রাস্তা ছেড়ে ডানপাশে বাগজোলা খালের ওপর অবস্থিত কৃষ্ণমাটি ব্রিজে ওঠে। তারপর দুই যুবক গাড়ি থেকে কয়েকশো কাগজের প্যাকেট ব্রিজের ওপর নামায়। এর পর সেগুলি একে একে খালের জলে ফেলতে শুরু করে। সে সময় হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল বলে ব্রিজের ওপর কোনও পথচারী ছিলেন না। কিন্তু খালের জল থেকে দুই যুবক বর্জ্য সংগ্রহ করছিল। এই দৃশ্য দেখে তারা চিৎকার করে উঠলে যুবকরা তড়িঘড়ি গাড়ি স্টার্ট করে নিউটাউনের দিকে পালিয়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই কৃষ্ণমাটি, সাতুলিয়া, জিরেনগাছা, গুছুরিয়া প্রভৃতি গ্রামের মানুষ জানতে পেরে যান ব্রিজের ওপর বস্তা বস্তা টাকা পড়ে আছে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই নোট কুড়োতে জড়ো হয়ে যান বহু মানুষ (ফোটো- ফিরোজ আহমেদ)
কিছুক্ষণের মধ্যেই অসংখ্য লোক জমায়েত হয়ে তা কুড়োতে শুরু করেন। রীতিমতো কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। কৃষ্ণমাটি ব্রিজ তখন ছোটখাটো যুদ্ধ ক্ষেত্রের চেহারা নেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশের টহলদারি ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় এই টাকা সরকারি সম্পত্তি। ততক্ষণে লোপাট হয়ে যায় কয়েক কোটি টাকা। এর পর অবশ্য টাকা হাতে নিয়ে পুলিশের ভুল ভাঙে । বোঝা যায় পুরো টাকাটাই জাল দু হাজার টাকার নোট। এই টাকার পরিমাণ আনুমানিক বিশ কোটি বলে জানা গিয়েছে। এত বিপুল পরিমাণ টাকা কোথা থেকে এল কে বা কারা ফেলে গেল সে ব্যপারে অন্ধকারে পুলিশ।
পুলিশের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, ওই নোটগুলি জেরক্স করা নোট, ওই নোটের উপরে জল পড়লে রং উঠে যাাচ্ছে। যদিও কারা ওখানে ওই নোট গুলি ফেলে দিয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে ভাঙড়ের তৃণমূল ব্লক সভাপতি ওহিদুল ইসলাম বলেন, "ওই জাল নোটগুলো বাংলাদেশ যাচ্ছিল না অন্য কোথাও যাচ্ছিল তার তদন্ত করছে পুলিশ।" তিনি আরও বলেন, "পুলিশ ও দলের পক্ষ থেকে গ্রামে মাইকিং করা হয়েছে যাঁরা জাল নোট পেয়েছেন তাঁরা যেন সেগুলি থানায় জমা দেন বা নিজেরা নষ্ট করে দেন।"