Advertisment

দায়িত্বে থেকেও নিখোঁজ পাইলটের খোঁজ দিতে পারলেন না স্ত্রী

উড়ানের দিন আসামের জোড়হাটেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের দায়িত্বে ছিলেন সন্ধ্যা, তবু মিলল না ভারতীয় বায়ুসেনার এএন-৩২র খোঁজ। এখনও নিখোঁজ বিমানচালক আশিস।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নিখোঁজ পাইলট আশিস এবং তাঁর বউ সন্ধ্যা ( ছবি সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে)

এখনও খোঁজ মেলে নি ভারতীয় বায়ুসেনার এএন-৩২র। এদিকে নিখোঁজ বিমানের তল্লাশি চালানোর সময় উঠে এলো আরেক তথ্য। নিখোঁজ বিমানের পাইলট আশিস তানওয়ারের (২৯) স্ত্রী সন্ধ্যা উড়ানের দিন অসমের জোড়হাটেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা যায়। প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর ১২টা ২৫ মিনিট নাগাদ আসামের জোড়হাট থেকে অরুণাচল প্রদেশের মেচুকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল বায়ুসেনার এএন ৩২ বিমানটি।

Advertisment

এদিন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আশিসের পরিবারের পক্ষ থেকে অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় বিমানবাহিনীর লেফট্যানেন্ট উদয়বীর সিং, যিনি সম্পর্কে আশিসের কাকা। তিনি বলেন, "ফ্লাইটের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার এক ঘন্টা বাদে আশিসের স্ত্রী আমাদের পুরো ঘটনাটি জানায়। প্রথমে আমরা আশা করছিলাম হয়তো চিনের বর্ডার পেরিয়ে ওখানেই জরুরি অবতরণ করেছে বিমানটি। কিন্তু সেক্ষেত্রে বিমানের বোর্ডে যারা ছিলেন তাঁরাও যোগাযোগ করতে পারতেন। যদি না বিমানটি পাহাড়ে ভেঙ্গে পড়ে..."। দীর্ঘশ্বাস ফেলে হঠাৎ চুপ হয়ে গেলেন একদা ভারতীয় বিমানবাহিনীর লেফট্যানেন্ট। একটু থেমে আবারও বলেন, "খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আশিসের বাবা আসাম পৌঁছন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে। কিন্তু আশিসের মা কার্যত সন্তানশোকে বিহ্বল হয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন।" অপরদিকে, অনুসন্ধান পর্ব যত এগিয়েছে ততই হতাশার ছাপ নেমে এসেছে নিখোঁজ এই পাইলটের পরিবারে।

আরও পড়ুন: বিমানসেবিকাকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার সহকর্মী

কিন্তু কীভাবে বায়ুসেনায় এলেন আশিস? সে প্রসঙ্গ উঠতেই স্মৃতির আরেকটা দরজা খুললেন আশিসের কাকা উদয়বীর। জানালেন, আশিসের বাবা রাধেলালরা ছয় ভাই। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনই সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে রাধেলাল এবং তাঁর বাকি তিন ভাই অবসরপ্রাপ্ত, তাঁদের মধ্যে তিনি নিজেও আছেন। নিজেদের পরিবারের প্রসঙ্গ এবং আশিসকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে উদয়বীর বলেন, "পরিবারের দ্বারা প্রভাবিত আশিস ছোট থেকেই দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োগ করতে চেয়েছিল। তার দিদিও বিমানবাহিনীর একজন লিডার।"

আশিসের আরেক কাকা শিবনারায়ণ জানান, "আশিস যখন একদম ছোট, তখন আমি ওর কাছে জানতে চেয়েছিলাম বড় হয়ে ও কি হতে চায়। উত্তরে ও বলেছিল, 'ফৌজি কা বেটা ফৌজি হি বনতা হ্যায়'।" আশিসের নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর বাড়িতে পুরোনো স্মৃতি আঁকড়ে ধরেই থাকতে চাইছেন তাঁর পরিবার। কথায় কথায় তাঁর কাকা জানালেন, "বাবার বদলির চাকরিসূত্রে পওয়ালে সেভাবে থাকা হয়নি আশিসের।" কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে পড়াশুনো করা আশিস তাঁর বি টেকের পড়া শেষ করে গুরগাঁওয়ের একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করেন। ২০১৩ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে যোগ দেন আশিস।

আরও পড়ুন: ঈদের আবহে মোদী-ইমরান একান্ত সাক্ষাৎ?

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের মে মাসে ট্রেনিং শেষ করে জোড়হাটে চলে আসেন এএন-৩২র নিখোঁজ পাইলট । সেখানেই আলাপ হয় একদা মথুরানিবাসী, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার সন্ধ্যার সঙ্গে। ২০১৮ সালেই দুই পরিবারকে পাশে নিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। সেই স্মৃতিকে রোমন্থন করে আশিসের কাকা বলেন, "ওরা ২ মে বাড়িতে এসেছিল, তারপর ১৮ মে ব্যাংককে ছুটি কাটাতে গিয়েছিল। সেখান থেকেই সোজা আসামে যায় ওরা। এই কয়েকদিনের ব্যবধানে যে এরকম মর্মান্তিক ঘটনা ঘটতে পারে এটা আমরা কোনওভাবেই বিশ্বাস করতে পারছি না।" এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে গেলেন আশিসের কাকা। অন্যদিকে, আশিসের একটা খবর পাওয়ার জন্য ভাঙ্গা মন নিয়েও অপেক্ষায় উদগ্রীব তাঁর পরিবার।

Read the full story in English

indian air force
Advertisment