রাখে হরি, মারে কে! এই প্রবাদকেই সত্যি করলেন সেন্ট্রাল রেলের পয়েন্টস ম্যান ময়ুর শেলখের। বাজ পাখির মতো এসে ছোঁ মেরে ময়ূর এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে থেকে এক শিশুকে নিরাপদে ফেরালেন মাতৃক্রোড়ে। নিজেও নিরাপদ হয়ে বাহবা কুড়োলেন রেলমন্ত্রীর।
পীযূষ গয়াল সেন্ট্রাল রেলের পয়েন্টস ম্যান ময়ূরকে কুর্নিশ করে নিজের ট্যুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। হাড়হিম করা সেই ভিডিও দেখলে আপনারাও হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে বাধ্য।
কী হয়েছিল? রেল মন্ত্রীর পোস্ট করা সেই ভিডিও মহারাষ্ট্রের ভাগনানি স্টেশনের। সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে মায়ের সঙ্গে এক খুদে, স্টেশনে ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষা করছিল। ওই স্টেশনের দু'নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিল মা-ছেলে। হঠাৎ মায়ের হাত ছেড়ে স্টেশনে ঘুরতে থাকে শিশুটি। মা বাচ্চার খেয়াল যতক্ষণে করেছেন ততক্ষণে মায়ের হাত ছেড়ে পা পিছলে সেই খুদে পড়ে গিয়েছে রেল ট্র্যাকে। আতঙ্কে মায়েরও দিশেহারা অবস্থা। ভিডিও দেখেই স্পষ্ট সন্তানকে বাঁচাতে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছে না সেই মহিলা। এদিকে উল্টো দিক থেকে প্রবল বেগে ছুটে আসছে একটা এক্সপ্রেস ট্রেন, সেই ট্র্যাক ধরে। সেই খুদে আর ট্রেনের দুরত্ব যখন প্রায় ৫০ ফুট, তখনও প্ল্যাটফর্মে ওঠার মরিয়া চেষ্টায় সেই শিশু। এই সময় ওই স্টেশন লাইনেই ডিউটিতে ছিলেন ময়ূর।
দেখুন সেই ভিডিও:
তিনি দূর থেকে দেখতে পেয়ে সেই ট্র্যাক ধরেই ছুটে আসেন। ট্রেন আর খুদের দুরত্ব আর যখন কয়েক ফিট তখনই ছোঁ মেরে এসে বাচ্চাটিকে সোজা স্টেশনে তুলে দিলেন ময়ূর। নিজেও ডিগবাজি খেয়ে উঠে পড়েন স্টেশনে। তারপরেই চোখের পলকে ট্রেন বেরিয়ে যায় সেই লাইন ধরে।
কয়েক সেকেন্ডের এই দৌড়ঝাঁপে এক সেকেন্ড এদিক ওদিক হলেই প্রাণ যেতে পারত বাচ্চাটির। আর বাচ্চাটিকে বাঁচাতে এসে প্রাণ দিতে হত কর্তব্যরত ময়ূরকে ময়ূরকে। ভিডিও দেখে এমনটাই বলছেন নেটিজেনরা।
তাঁর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে এসে এইভাবে শিশুর প্রাণ বাঁচানোর ভিডিও দেখে তাজ্জব গোটা দেশ। সকলেই ময়ূরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁর সাহসিকতা পুরস্কৃত হওয়ার যোগ্য। এমন ট্রেন্ডিং শুরু ট্যুইটারে।
এদিকে, সন্তানকে অক্ষত অবস্থায় কোলে ফিরে পেয়ে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন মা। স্টেশনে ময়ূরকে জড়িয়ে ধরেন স্টেশনের বাকি সকলে। এমন সাহস , এবং ময়ূরের চেষ্টাকে বাহবা জানিয়ে সেই সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল করেন খোদ রেলমন্ত্রী।
তিনি ট্যুইটারে লেখেন, ‘ভাগনানি স্টেশনের রেলকর্মী ময়ূরের সাহসিকতায় গর্বিত। যেভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একটা শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছেন সত্যি ব্যতিক্রমী।‘