প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় ভাঙচুর, তাণ্ডবের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হল। ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকা অবমানননায় যেসব ব্যক্তি বা সংঘটন জড়িত তাদের ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে উপযুক্ত শাস্তি বিধানের জন্য সশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ জারির জন্য আদালতে আর্জি জানানো হয়েছে।
Advertisment
আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি বুধবার লালাকেল্লায় তাণ্ডবের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে দু'জন হাইকোর্টের বিচারপতিতে নিয়ে মোট তিন সদস্য়ের কমিটি গড়া হোক। এই কমিটি তথ্য প্রমাণ জোগাড় ও বয়ান রেকর্ড করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শীর্ষ আদালতে রিপোর্ট জমা দেবে।
আবেদনকারী বলেছেন, 'হতে পারে কোনও কুখ্যাত ব্যক্তি বা সংগঠন কৃষকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে আশান্তি ছড়ানো ও কৃষক-পুলিশ সংঘর্ষের চেষ্টায় এইসব কাজ করেছে। গত দু'মাস ধরে যখন একেবারে অহিংস পথে কৃষক আন্দোলন হচ্ছে তখন দেখার বিষয় কেন প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনই তা হিংসাত্মক হয়ে উঠল। পুরো বিষয়টির সঙ্গে জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্ন জড়িত। তাই কেন কৃষক আন্দোলন থেকে হিংসা ছড়ালো, কীভাবে অহিংস আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে উঠল তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।'
Advertisment
প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালি রাস্তায় নামতেই পরিস্থিতি ধুন্দুমার হয়ে ওঠে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড ভাঙে এগনোর অভিযোগ ওঠে কৃষকদের বিরুদ্ধে। পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে কাঁদানে গ্যাস ও লাঠি। পাল্টা মারমুখী হয় আন্দোলনকারীদের একাংশ। একটি দল পৌঁছে যায় লালকেল্লাতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখে আন্দোলনকারীদের সীমানায় ফেরার জন্য বার বার আবেদন করতে থাকেন নেতারা। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। উল্টে দিল্লি কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে যায়।
পুলিশ ও কৃষক সংঘর্ষের মধ্যেই ট্রাক্টর উল্টে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। আহত হন প্রায় ২০০ পুলিশ কর্মী। লাল কেল্লা ও রাজধানীর বিভিন্ন অংশে কৃষকদের বিরুদ্ধে তাণ্ডব ও ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার ভয়াবহতা আঁচ করে মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত দিল্লির বিভিন্ন অংশের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ ছিল মেট্রোও। রাতে অবশ্য লালকেল্লা চত্বর ফাঁকা করে দেয় পুলিশ। মোতায়েন করা হয় বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনী।
২৬ জানুয়ারি প্রতিবাদী কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালি ঘিরে যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয় তার দায় কোনও কৃষক সংগঠনই স্বীকার করেনি। উল্টে সেই ঘটনা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন সংঘবদ্ধ কিষাণ মোর্চা।সংগঠনের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়, এই হিংসাত্মক ঘটনা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখছে এই মোর্চা।