১১’এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে নির্মিত হাসিনা ফখরুর বাড়ি ভেঙে ফেলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে খারগোনের জেলা শাসক বলেন, “আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। সরকারি জমির উপর দখল করা বাড়ি উচ্ছেদে আমরা যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করেছি”।
সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মাঝেই ঘটে এমন ঘটনা। যদিও প্রশাসনের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে এই ঘটনা নিছকই কাকতালীয়। হাসিনা ফখরুর দাবি তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পেয়েছিলেন।
তার অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ২ লক্ষ টাকা ঢোকার পরই তিনি উচ্ছেদের নোটিশ পান বলে তাঁর দাবি। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং চলতি বছরের ১০ মার্চ আদালত তার নির্মাণ অবৈধ বলে ঘোষণা করেন। তারপরেও তিনি তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ৫০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন।
৭ এপ্রিল দ্বিতীয় নোটিশের পর হাসিনার বাড়িটি প্রশাসনের তরফে ভেঙে ফেলা হয়। হাসিনার অভিযোগ তিনি উচ্চ আদালতে আবেদনের সময়টুকু ও পাননি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে আরও একটি বাড়ি উচ্ছেদ অভিযানের সময় ভেঙে ফেলা হয়। যদিও সুপ্রিম কোর্টে তার বিরুদ্ধে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তার তদন্তে জানতে পারে হাসিনার বাড়িটি প্রায় ৫ বার জিওট্যাগিং করা হয়েছে। প্রথম জিও-ট্যাগিং হয় ২০২০ সালের ২২ জুলাই। চূড়ান্ত জিও-ট্যাগিং হয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বরে।
বাড়ির সামনের দেওয়ালে স্কিমের একটি স্ট্যাম্পে উল্লেখ করে ছিল সুবিধাভোগীর নাম এবং আইডি। যাতে জানা গিয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বাড়িটি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা পায় এবং ২.৫ লক্ষ টাকা অনুদানে বাড়িটি নির্মিত হয়েছে। ২০২২ সালের ৪ঠা এপ্রিল হাসিনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ৫০ হাজার টাকা। এব্যাপারে খারগোনের পুরসভায় যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, জিও-ট্যাগিংয়ের কাজ একটি এজেন্সি করেছিল।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ হাসিনা প্রথম নোটিশ পান। এই নোটিশে অভিযোগ করা হয় হাসিনা ওই জমি দখল করে রয়েছেন। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ হাসিনা অভিযোগের উত্তর দেন, তিনি বলেন, তিনি একজন বিধবা, "প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে জমিটি স্বামীর নামে অনুমোদিত হওয়ার পরে উল্লিখিত জমিতে বাড়িটি নির্মাণ করেন পাশাপাশি তিনি এও বলেন তার অন্য কোন বাড়ি নেই। চলতি বছর ৯ এপ্রিল রামনবমী মিছিলের সময় সংঘর্ষ শুরু হয় এবং হাসিনার বাড়ি থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অন্তত ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পরের দিন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় ডজন খানেক অবৈধ বাড়ি ভেঙ্গে দেওয়া হয়, যার মধ্যে ছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে নির্মিত হাসিনা ফখরুর বাড়ি। এব্যাপারে হাসিনা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “যখন প্রশাসন ভেঙ্গেই দেবে তখন আমাকে বাড়ি তৈরির অনুমতি কেন দেওয়া হল?! যদিও এব্যাপারে কর্মকর্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে যে বাড়ির কথা বলা হচ্ছে তার ঠিকানা সম্পূর্ণ ভিন্ন, যদিও সেই ঠিকানার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে মুখে কুলুপ প্রশাসনের।
Read story in English