কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বিপর্যস্ত দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। যত দিন যাচ্ছে, প্রকট হচ্ছে অক্সিজেন সহ চিকিৎসার জরুরি সরঞ্জামের ঘাটতি। বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালে ভেন্টিলেটরের অভাব মেটাতে শনিবার অডিটের ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের পাঠানো ভেন্টিলেটরের যথাযথ ব্যবহার খতিয়ে দেখতে এই পদক্ষেপ।তাঁর আবেদন,’কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে পাঠানো ভেন্টিলেটর যেন যথাযথ ভাবে কাজে লাগানো হয়।‘ এমনকি, বিষয়টিতে নজর রাখতে কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকদের কড়া নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠক সম্পর্কে এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানান, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে খবর আছে, কিছু রাজ্য কেন্দ্রের পাঠানো ভেন্টিলেটর সঠিক ভাবে কাজে লাগাচ্ছে না। ব্যবহার না করে তা ফেলে রাখা হয়েছে। সেই সব ভেন্টিলেটর যাতে হাসপাতালগুলিতে বসিয়ে রোগীদের চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয়, তার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ভেন্টিলেটর ব্যবহারের পদ্ধতি স্বাস্থ্যকর্মীদের অজানা থাকলে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’’
এ ছাড়াও বৈঠকে গ্রামাঞ্চলে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ানো, বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা পরীক্ষা এবং কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। যেখানে সংক্রমণের হার বেশি, সেখানে করোনা পরীক্ষার হার বাড়ানোর পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় ছোট ছোট কন্টেনমেন্ট জোন তৈরির কৌশলে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, অক্সিজেন নিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর। এবার বাংলায় অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির উদ্যোগের কথা জানিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোট ৭০টি কারখানা তৈরি করতে চায় রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্র সরকার মাত্র চারটির অনুমতি দিয়েছে। তা নিয়েই চিঠিতে সরব হয়েছেন মমতা।
তিনি লিখেছেন, “আমাদের বলা হয়েছিল যে আমরা ৭০টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট পাব, এখন আমাদের বলা হয়েছে প্রথম ধাপে ৪টি পাব। বাকি কারখানার বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। রাজ্য সরকার তার নিজের তহবিল ও সংস্থা দিয়ে অতিরিক্ত অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছে। যদিও সেই পরিকল্পনা দিল্লির কারণে বাধা পাচ্ছে।”
কয়েকদিন আগেই অক্সিজেন ঘাটতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি চিঠিতে লিখেছিলেন, “বাংলায় অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ছে। দৈনিক প্রায় ৪৭০ মেট্রিক টন অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। আগামী ৭-৮ দিনে এই চাহিদা ৫৫০ মেট্রিক টন হয়ে যাবে। কিন্তু বাংলায় উৎপাদিত অক্সিজেন অন্য রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। যেখানে রাজ্যে রোজ ৫৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের প্রয়োজন, সেখানে মাত্র ৩০৮ মেট্রিক টন পাওয়া যাচ্ছে।”
এই চিঠির পর সম্প্রতি রাজ্যে টিকা উৎপাদ কারখানা তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করে মোদীকে চিঠিতে আর্জি জানান মমতা। বলেন, “রাজ্যে টিকা তৈরির কারখানা হোক। বাংলা জমি দেবে।” তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়, করোনা পর্বে একাধিক চিঠি পাঠালেও প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কোনও উত্তর পাননি মুখ্যমন্ত্রী। এবারও একই জিনিস হবে বলে মত বিশ্লেষকদের।