অতিমারির সময়ে জনগণের টাকা লুঠ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার অসমের এক জনসভায় এই ভাষায় আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধী। দেশের পাঁচটি রাজ্যের সঙ্গে চলতি বছর এপ্রিলে অসমেও বিধানসভা ভোট। তাই ভোটমুখী পূর্বের এই রাজ্যে রবিবার জনসভা করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। শিবসাগর জেলার এই জনসভায় এই কংগ্রেস সাংসদ ফের 'হাম দো, হামারে দো' প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তাঁর অভিযোগ, 'প্রধানমন্ত্রী তাঁর দুই বিশেষ বন্ধুর ঋণ মকুব করে চলেছেন। আর মানুষের টাকা লুঠ করছেন।' এমনকী, অসমের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শুধু নাগপুর আর দিল্লির কথা শুনে কাজ করে। এমন ভাবেও সর্বানন্দ সোনওয়ালকে কটাক্ষ করেন কংগ্রেস সাংসদ।
তিনি বলেন, 'রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়, মুখ্যমন্ত্রীকে নয়। আপনাদের একটা নিজস্ব মুখ্যমন্ত্রী দরকার। সে আপনাদের কথা শুনবেন, নাগপুর বা দিল্লির কথা নয়।'
এদিন অসম চুক্তি ফিরিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করেন। তাঁর আবেদন, 'কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরলে দলের সব কর্মী এবং আমি অসম চুক্তির নীতি মেনে চলবো। এক ইঞ্চিও সরবো না সেই চুক্তি থেকে।' তাঁর দাবি, 'ঐক্যবদ্ধ অসম গড়েছে পূর্বতন কংগ্রেস সরকার। আগে সভা-সমাবেশ থেকে ফেরার পথে হিংসার বলি অনেকেই হতেন। কিন্তু কংগ্রেস আমলে সেই পরিবেশে বদলেছে। ঐক্যবদ্ধ অসম গড়েছে কংগ্রেস সরকার।'
তাঁর অভিযোগ, 'বিজেপি-আরএসএস অসমকে ভাগ করার চেষ্টা করছে। এই রাজনীতির কারণে মোদি-শাহ কোনওভাবে প্রভাবিত হবেন না। কিন্তু অসম-সহ বাকি দেশ প্রভাবিত হবে।'
এদিকে, কৃষি আইন নিয়ে প্রতিবাদে রাহুল গান্ধী বৃহস্পতিবার লোকসভায় চরম আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রকে। তাঁর দাবি, এই আইন কৃষক, ক্ষুদ্র, মাঝারি ব্যবসায়ী এবং মান্ডি প্রথাকে ধ্বংস করার জন্য তৈরি হয়েছে। তার সঙ্গে তাঁর তোপ, দেশ এখন চারজন চালাচ্ছে। তাঁদের মূলমন্ত্র হল, ‘হাম দো, হামারে দো’! বাজেট অধিবেশনে রাহুলের মন্তব্যের জেরে তুমুল হট্টগোল হয়। ট্রেজারি বেঞ্চ এবং সরকার পক্ষের সদস্যরা তীব্র বিরোধিতা করেন এই মন্তব্যের। অধ্যক্ষকে চাপ দেন তাঁরা, রাহুলকে বক্তব্য বন্ধ রাখার জন্য।
যদিও রাহুল বলেছেন, তিনি শুধু কৃষকদের স্বার্থের কথাই সংসদে বলবেন। যা কেন্দ্র আলাদা ভাবে আলোচনা করতে চাইছে না। হট্টগোলের মধ্যেই রাহুল বলেন, “তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির বিভিন্ন সীমান্তে কৃষকরা আন্দোলন করছেন। এই আইন মান্ডি প্রথা, নিত্য প্রয়োজনীয় আইনকে ধ্বংস করা এবং দেশের কর্পোরেটদের হাতে কৃষি ফসল তুলে দেওয়ার চক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছিলেন, বিরোধীরা আইনের বিষয়বস্তু এবং উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করছেন না। আমি আজ বলতে চাই। আমি বিলের বিষয়বস্তু নিয়ে বলতে চাই। চারজন দেশ চালাচ্ছে। সেটা সবাই জানে তাঁরা কারা!” এরপরই পরিবার নিয়োজনের বিখ্যাত সেই স্লোগান ‘হাম দো, হামারে দো’ তোলেন।