প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) তার উত্তর-পূর্ব সফরের অংশ হিসাবে মেঘালয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর ত্রিপুরায় পৌঁছেছেন। এখানেও বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (শহর ও গ্রামীণ) অধীনে দুই লক্ষেরও বেশি সুবিধাভোগীদের জন্য 'গৃহ প্রবেশ' কর্মসূচি চালু করেন এবং এক বিবৃতিতে বলেন, ত্রিপুরায় সংযোগ এবং পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এদিন বলেন, ত্রিপুরার সর্বাত্মক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ করে চলেছে এবং গৃহীত প্রকল্পগুলি রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানী আগরতলায় জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময়, প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রথমে দেরিতে পৌঁছানোর জন্য জনসাধারণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। তিনি বলেন, " আমি মাথা নিচু করে আপনাদের সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারণ আমি আসতে প্রায় দুই ঘণ্টা দেরি হয়ে গিয়েছে। আমি মেঘালয়ে ছিলাম, সেখানে সময় একটু বেশি সময় লেগে গেল এবং আমি জানতে পেরেছি সকাল থেকে এই জনসভায় লোকেরা আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। এত কষ্ট সহ্য করেও এতসময় ধরে আমার জন্য বসে আপনারা আমাকে যে নিয়ে আশীর্বাদ দিতে এসেছেন, আপনাদের প্রতি যতটুকু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব তাই কম”।
আরও পড়ুন: < মন্ত্রিসভার বড় সিদ্ধান্ত, লোকপালের আদলে মহারাষ্ট্রে লোকায়ুক্তের অনুমোদন >
ছোট রাজ্যগুলির মধ্যে পরিচ্ছন্ন ত্রিপুরা'
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, "আমি ত্রিপুরার জনগণকে অভিনন্দন জানাই যে আপনাদের সকলের প্রচেষ্টায় আপনারা এখানে পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত একটি বড় অভিযান শুরু করেছেন। গত পাঁচ বছরে পরিচ্ছন্নতাকে গণআন্দোলনে পরিণত করেছেন। তারই ফল হল, এবার ছোট রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরা দেশের সবচেয়ে ‘পরিচ্ছন্ন রাজ্য’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
জনসভা থেকে বিরোধীদের সরাসরি আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, “বিরোধীদের চিন্তাভাবনা নেতিবাচক। বিরোধীরা নেতিবাচকতা ছড়ায়।" প্রধানমন্ত্রী মোদী গুজরাটের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে বিজেপির বিরাট সাফল্যের কথাও এদিন তাঁর সভায় উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বিজেপি গুজরাটে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভোট পেয়েছে’। মানুষ দুহাত ভরে বিজেপিকে আর্শীবাদ করেছে’।
'ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য আলোচনা হচ্ছে'
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, "দশকের দশক ধরে ত্রিপুরায় এমন একটি দল ক্ষমতায় ছিল যারা উল্টো পথে হাঁটতে ভালবাসে। ত্রিপুরায় কিছু লোক সুবিধাবাদী রাজনীতি্কে মদত দিয়ে গেছে। আদিবাসী সমাজের প্রথম পছন্দ বিজেপি। আজ ত্রিপুরা উন্নয়নের জন্য সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। ২০১৭ সালের আগে, ত্রিপুরায় গরিবদের রেশনে লুট হতো”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গত পাঁচ বছরে ত্রিপুরার গ্রামগুলো সড়কপথে যুক্ত হয়েছে। আপনাদের সকলের প্রচেষ্টায় ত্রিপুরার উন্নয়ন হচ্ছে। আজ রাজ্য প্রথম ডেন্টাল কলেজ পেল। এর মাধ্যমে ত্রিপুরার যুবকরা এখানেই ডাক্তারি পড়ার সুবিধা পাবেন”।
উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা - প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী মোদী এদিন বলেন, "আমি আজ মেঘালয়ে একটি বৈঠকে ছিলাম, এই বৈঠকে আমরা আগামী বছরগুলিতে ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, "এখন সময় এসেছে। বদলে গেছে, আজ ত্রিপুরায় আলোচনা হচ্ছে পরিচ্ছন্নতার জন্য, পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য, দরিদ্ররা লক্ষাধিক বাড়ি পাচ্ছে, তার আলোচনা চলছে দেশের সর্বত্র।
'দুই লাখের বেশি গরিব পাকা বাড়ির মালিক’
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, "আজ ত্রিপুরার দুই লাখেরও বেশি দরিদ্র পরিবার তাদের নতুন পাকা বাড়িতে প্রবেশ করছে। নতুন পাকা বাড়ির গর্বিত মালিক হওয়ার জন্য আমি আমার ত্রিপুরার সকলকে অভিনন্দন জানাই। ত্রিপুরা আবাস যোজনায় এগিয়ে রয়েছে। ত্রিপুরায় ডাবল ইঞ্জিন সরকার ক্ষমতায় এসেছে’।