আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক এবং সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার দুটি নতুন উদ্যোগ ঘোষণা করেছেন। তার একটি হল- 'বিশ্বকর্মা যোজনা'। যা ১৩,০০০ কোটি থেকে ১৫,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি নতুন প্রকল্প। আর, অন্যটি হল 'লক্ষপতি দিদি'। যার অধীনে দুই কোটি মহিলাকে দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে তাঁরা বার্ষিক কমপক্ষে একলক্ষ টাকা আয় করতে পারেন। ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার প্রাচীর থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি জি-২০-তে নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের বিষয়টি এগিয়ে নিয়েছেন। তাঁর সেই আহ্বান বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আজ, আমরা দুই কোটি লক্ষপতি দিদি তৈরির লক্ষ্য নিয়ে নারী স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে কাজ করছি। আমরা যখন আমাদের নারী শক্তির সম্ভাবনা, নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের প্রচার করছি এবং যখন আমি জি-২০-তে নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়েছি, তখন সমগ্র জি-২০ গোষ্ঠী-এর গুরুত্ব স্বীকার করছে।' মোদী বলেন, 'আজ ১০ কোটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্ত। আপনি যদি একটি গ্রামে যান, আপনি মহিলাকে ব্যাংকে কাজ করতে দেখবেন। অঙ্গনওয়াড়িতে কাজ করছেন এমন মহিলাদের পাবেন। আপনি ওষুধ দেন এমন মহিলাদের পাবেন। এখন আমার স্বপ্ন হল ২ কোটি লক্ষপতি দিদি তৈরি করা (যে মহিলারা বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা বা তার বেশি আয় করবেন।)'
দুই কোটি লক্ষপতি দিদি তৈরি করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে একটি নতুন বিকল্প পদ্ধতির ব্যবহার করা হবে। মহিলাদের ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে কৃষি খাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আনা যায়। মোদী বলেন, 'আমরা ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষণ দেব। ড্রোন মেরামতির প্রশিক্ষণ দেব। ভারত সরকার কয়েক হাজার মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ড্রোন সরবরাহ করবে। সেই মহিলারা প্রশিক্ষণ দেবেন। আমরা আমাদের কৃষিকাজের জন্য ড্রোনের ব্যবহার করা শুরু করব। প্রাথমিকভাবে ১৫ হাজার মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।'
আরও পড়ুন- যদি কেউ বেঁচে থাকে! হিমাচলের ধসে যাওয়া মন্দিরের সামনে অপেক্ষায় উদ্বিগ্ন আত্মীয়রা
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী একটি নতুন প্রকল্প বিশ্বকর্মা যোজনাও ঘোষণা করেছেন। ঐতিহ্যগত দক্ষতা থাকা লোকেদের প্রশিক্ষণ দিতে এজন্য সরকারের ১৩,০০০ কোটি থেকে ১৫,০০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। মোদী বলেন, 'আগামী দিনগুলোতে আমরা আসন্ন বিশ্বকর্মা জয়ন্তী উপলক্ষে একটি প্রকল্প চালু করব। এই বিশ্বকর্মা জয়ন্তীতে আমরা প্রায় ১৩,০০০-১৫,০০০ কোটি টাকা দেব সেই সমস্ত লোকেদের, যাদের ঐতিহ্যগত দক্ষতা আছে। যারা যন্ত্র দিয়ে এবং নিজের হাতে কাজ করে, এর বেশিরভাগই আবার ওবিসি সম্প্রদায়ের। সে আমাদের ছুতোর, আমাদের স্বর্ণকার, আমাদের রাজমিস্ত্রি, আমাদের লন্ড্রি শ্রমিক, আমাদের নাপিত ভাই এবং বোন- যেই হোক না-কেন।'