ইউক্রেনে গিয়ে আটকে পড়েছেন অসংখ্য পড়ুয়া। যার মধ্যে বেশিরভাগই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। কিন্তু, মেডিক্যাল পড়তে বিদেশে যাওয়া কেন? সপ্তসাগর পার হয়ে সেই বিদেশ-বিভুঁইয়ে? এই প্রশ্নটা বর্তমান সময়ে আরও বেশি করে উঠছে। কারণ, ওই পড়ুয়ারা যদি ইউক্রেনে না- যেতেন, তবে তো এমন পরিস্থিতি তৈরিই হত না।
রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলায় ওই পড়ুয়াদের আটকে পড়তে হত না। তৈরি হত না এক জীবন-মরণ সমস্যা। যে সমস্যা মেটাতে শুধু পরিবারের লোকজনই না। রাজ্য থেকে কেন্দ্র, সমগ্র প্রশাসনকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হত না। পড়ুয়াদের পাশাপাশি দিনের পর দিন উদ্বেগে কাটাতে হত না পরিবার-পরিজন, দেশবাসীকে।
এই সব বিষয়গুলো বর্তমানে ইউক্রেন থেকে পড়ুয়াদের দেশে ফেরানোর সময় আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। তার জবাব দিয়ে গিয়ে পূর্বতন কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়েই দায় ঠেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর অভিযোগ, আগের সরকারের মেডিক্যাল শিক্ষানীতিতে গলদ ছিল। আর, সেই কারণে ওই পড়ুয়াদের ডাক্তারি পড়তে বিদেশে ছুটতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ' কোনও মা-বাবাই চান না যে তাঁদের সন্তানরা এই বয়সে বিদেশে পড়তে ছুটুক। তাই পূর্বতন সরকারের আমলে দেশের মেডিক্যাল শিক্ষানীতি যদি ঠিক হত, তবে পড়ুয়াদের আর ইউক্রেনে পড়তে যেতে হত না।'
ভারতীয় পড়ুয়াদের ইউক্রেন থেকে ফেরাতে যে কর্মসূচি হাতে গিয়েছে কেন্দ্র, তার নাম দেওয়া হয়েছে 'অপারেশন গঙ্গা।' ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচিতে বহু পড়ুয়াকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। তেমন কয়েকজনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বলছিলেন। তখনই তিনি পূর্বতন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পূর্বতন সরকারের মেডিক্যাল শিক্ষানীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, তার দায় কি তাঁর সরকারও এড়াতে পারে? কারণ, ইতিমধ্যে কেন্দ্রে মোদী সরকারের প্রায় আট বছর হতে চলেছে। যে পড়ুয়ারা এখন সেখানে পড়ছিলেন, তাঁরা সকলেই তৃতীয় এবং চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তাহলে ওই পড়ুয়ারা বিদেশে গিয়েছেন মোদী সরকারের আমলেই। তার দায় তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিভাবে এড়াবেন? সেই প্রশ্ন তুলছেন পড়ুয়াদের অনেকেই।
তবে, পড়ুয়াদের অভিযোগ সামাল দিতে চেষ্টার কসুর করেননি প্রধানমন্ত্রীও। তিনি জানান, ইউক্রেনে থাকতে গিয়ে বহু পড়ুয়াকেই নানা দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। সেই সময় তাঁদের দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। নানা বাধা-বিপত্তির মুখে পড়ুয়াদের পড়তে হয়েছে। সেই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বহু পড়ুয়াই প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিলেও সেই পড়ুয়াদের প্রতিও যে তাঁর সমান সহানুভূতিই রয়েছে, তেমনটাই দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
Read story in English