ভারতের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে নৌ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে প্রথম দেশীয় বিমানবাহী রণতরী 'আইএনএস বিক্রান্ত'। প্রধানমন্ত্রী মোদী আজ এই বিমানবাহী রণতরীর শুভসূচনা করেন। এই এটি ভারতের ইতিহাসে নির্মিত সবচেয়ে বড় যুদ্ধ জাহাজ।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কেরালা সফরের শেষ দিন। আজ, প্রধানমন্ত্রী কোচি থেকে ভারতীয় তৈরি বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্তকে নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। মেক ইন ইন্ডিয়ার অধীনে তৈরি করা হয়েছে এই বিমানবাহী রণতরী। এটি এখন পর্যন্ত ভারতের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী। ভারতের আগে মাত্র পাঁচটি দেশ ৪০ হাজার টনের বেশি ওজনের বিমানবাহী রণতরী তৈরি করেছে। আইএনএস বিক্রান্তের ওজন ৪৫,০০০ টন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী টুইট করে এই তথ্য দিয়েছেন
অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি পোস্ট করেছেন। যাতে লেখা হয়, "প্রতিরক্ষা খাতে স্বনির্ভরতার পথে আরও এক কদম! ২রা সেপ্টেম্বর ভারতের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। প্রথম দেশীয় ডিজাইন ও প্রযুক্তিতে তৈরি বিমানবাহী রণতরী 'আইএনএস বিক্রান্ত'-এর শুভ সূচনা হবে।"
আরও পড়ুন: < নাবালিকা ধর্ষণে অভিযুক্ত লিঙ্গায়ত মঠের সাধু শিবমূর্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ >
আজ ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন
শুক্রবার ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রথম দেশীয় বিমানবাহী রনতরী আইএনএস বিক্রান্ত হাতে পাবে নৌবাহিনী এবং এটি বাহিনীর হাতেি হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেরালার কোচিন শিপইয়ার্ডে নির্মিত এই বিমানবাহী রণতরীটির নির্মাণে ২০হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই জাহাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হলে নৌবাহিনীর শক্তি দ্বিগুণ হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তৈরি করতে ১৩ বছর লেগেছে
২০০৯ এর ফেব্রুয়ারিতে INS বিক্রান্তের নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের আগস্টে প্রথমবার বিক্রান্তকে জলে নামানো হয়েছিল। এই এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারের বেসিন ট্রায়াল ২০২০ সালের নভেম্বরে শুরু হয়েছিল। এর পরে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে এটির ট্রায়াল শেষ হয়। ট্রায়াল শেষ হওয়ার পরে, এটি ২০২২ সালের জুলাই মাসে কোচিন শিপইয়ার্ড দ্বারা নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। এটি তৈরি করতে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই জাহাজের বিভিন্ন অংশ ১৮টি রাজ্যে তৈরি করা হয়েছে। এই এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারে ৭৬% দেশীয় সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
বিশেষ গ্রেড ইস্পাত ব্যবহৃত
এটি তৈরিতে ২১ হাজার টনেরও বেশি বিশেষ গ্রেডের ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ২,৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ১৫০ কিলোমিটারের বেশি পাইপলাইনও ব্যবহার করা হয়েছে। এর উচ্চতা ৬১.৬ মিটার অর্থাৎ ১৫ তলা ভবনের সমান। দৈর্ঘ্য সম্পর্কে কথা বলতে গেলে, এটির দৈর্ঘ্য ২৬২.৫ মিটার । এই জাহাজে ২,৩০০ টি বগি তৈরি করা হয়েছে। এই জাহাজে MiG-29K ফাইটার এবং Ka-31 হেলিকপ্টারের একটি বহর মোতায়েন করা হবে। এই জাহাজটি একসঙ্গে ৩০টি যুদ্ধবিমান চালনা করতে সক্ষম। এর সর্বোচ্চ গতি ২৪ নট। চলতি বছরের নভেম্বর মাস থেকে বিক্রান্তে MiG-29K যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা শুরু হবে।
আজই দেশের নৌবাহিনী ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার ছাপ থেকে মুক্তি পেতে চলেছে। এবার এদেশের নৌবাহিনীর জাহাজে থাকবে নয়া পতাকা। শুক্রবার সেই পতাকার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজস্ব পতাকা হাওয়ায় উড়িয়ে নৌবাহিনীর শক্তিকেই প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরতে চাইছেন বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।