ইন্দো-চিন সীমান্তে উত্তেজনা। তার মাঝেই আজ লে-তে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ানে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় ২০ জন ভারতীয় সেনাকর্মীর। তারপর থেকেই দুই দেশের সীমান্ত ঘিরে উত্তেজনা চরমে। কূটনৈতিক ও সেনা পর্যায়ে আলোচনা চলছে। তার মধ্যেই এদিন লে-তে পৌঁছেছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াতকে নিয়ে শুরুতেই ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত নিমুতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে কর্মরত সেনা জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এছাড়াও তাঁকে কথা বলতে দেখা যায় বায়ু সেনা ও আইটিবিপি জওয়ানদের সঙ্গেও। উল্লেখ্য, শুক্রবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও সেনা প্রধান নারাভানের উপত্যকায় যাওয়ার কথা ছিল। পরে জানানো হয় সেই সফর তা বাতিল হয়েছে। তারপরই এদিন লে-তে পৌঁছে যান মোদী। ইন্দো-চিন সেনা সংঘর্ষের পর সীমান্তের বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই প্রধামন্ত্রীর এই সফর বলে মনে করা হচ্ছে।
সীমান্ত সংঘর্ষে আহত সেনা জওয়ানদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি লেফট্যানেন্ট সহ স্থানীয় সেনা নেতৃত্বের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী মোদী কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে গালওয়ান সংঘর্ষে মৃত সেনা জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেছিলেন, 'লাদাখের দিকে যারা চোখ তুলে তাকিয়েছিল তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে। ভারত বন্ধুত্ব জানে, কিন্তু আক্রমণ হলে তার জবাবও দিতে পারে। ভারত মাতার ক্ষতি সেনা জওয়ানরা মেনে নেবে না।'
এর আগে, উত্তেজনার আবহে সেনা প্রধান এম এম নারাভানে ইতিমধ্যেই দু'বার লাদাখে গিয়েছেন। মে মাসে লে-তে অবস্থিত ১৬ সেনা হেডকোয়ার্টাসে যান তিনি, জুনে সংঘর্ষে আহত সেনা কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সেনা প্রধান।
ভারত-চিন সীমান্ত সংঘর্ষ প্রশমণে দুই দেশের সেনা কমান্ডোস্তরে আলোচনা হয়েছে। গত মঙ্গলবার শেষ বৈঠকে হয়। তবে, বৈঠক থেকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। সেনা ও কূটনৈতিকস্তরে এই ধরনের আরও বৈঠকের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে ভারতীয় সেনা। বৈঠকে উভয় শিবিরই নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে বাড়তি সেনা সরানোর পক্ষে সম্মত হয়েছে।
তবে, দু'দেশের চুক্তি প্রথম লাল ফৌজ লংঘন করেছে বলে অভিযোগ দিল্লির। মুখে সেনা সরানোর কথা বললেও নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা মোতায়েন ও অস্ত্র মজুত করছে চিন। পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪, ফিঙ্গার ৮-এ নির্মাণ কাজও করেছে তারা। দাবি ভারতীয় সেনার। এমনকী ভারতীয় সেনাকে ফিঙ্গার ৪, ৮ সহ একাধিক জায়গায় নজরদারিতেও চিনা বাহিনী বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এছাড়া, কৌশলগত কারণে ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দেপসাংয়ে চিনা সেনা ঢুকে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাল্টা নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতও সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখার একাধিক জায়াগায় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দু'দেশের সেনা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন