বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) তিন দিনের বিদেশ সফরে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সফরকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু দিনের জন্য ফ্রান্স এবং একদিনের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সফর করবেন। ফ্রান্স সফরের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি বিবৃতি জারি করে তাঁর ফ্রান্স সফরের তথ্য সকলের সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
তিনি বলেছেন, “আমি আমার বন্ধু ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে ১৩-১৪জুলাই ফ্রান্সে একটি সরকারি সফরের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে চলেছি। এই সফরটি দু’দেশের জন্যই বিশেষ কারণ আমি ফ্রান্সের জাতীয় দিবস বা বাস্তিল দিবসের কুচকাওয়াজে ফরাসি প্রেসসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেব” ।
আগামী ১৪ জুলাই থেকে দু’দিনের ফ্রান্স সফরে প্যারিস যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফ্রান্সের বাস্তিল ডে প্যারেডে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন তিনি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-য়ের পরে, মো্দী’ই হলেন দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী যাকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর উভয় দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য এই সফরের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। মোদীর এই সফর ফ্রান্সের সঙ্গে ভারতের কৌশলগত বন্ধুত্ব জোরদার করবে, অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে এই সফরে। এছাড়াও মোদীর এই সফর ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মোদী আরও বলেন, “ভারত-ফ্রান্স দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত সম্পর্কে ২৫ বছর পূর্তিতে আমাদের দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং জনগণের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে”। তিনি বলেন, “আমার সফরের সময়, আমি ভারতীয় সম্প্রদায়, উভয় দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং বিশিষ্ট ফরাসি ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাব। আমি নিশ্চিত যে আমার সফর আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন গতি দেবে”।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ৩০ বছরে ফ্রান্স ইউরোপে ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। প্রতিরক্ষা চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে রাশিয়ার পর ফ্রান্সও ভারতের সবচেয়ে বড় বন্ধু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই মোদীর এই সফর বিশেষ ভাবে গুরুত্বপুর্ণ উভয় দেশই প্রতিরক্ষা চুক্তি সংক্রান্ত একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সঙ্গে নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্র্যোঁ প্যারিসের বিখ্যাত মিউজিয়াম পরিদর্শনে যাবেন এবং প্রবাসী ভারতীয়দের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক হতে চলেছে। ইতিমধ্যে উভয় দেশ প্রতিরক্ষা খাতেও একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। ফ্রান্স থেকে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়েই ইতিবাচক বৈঠক হতে পারে মোদীর এই সফরে। মোদীর এই সফরে নৌবাহিনীর প্রয়োজনে ফ্রান্স থেকে ২৬টি রাফালে বিমান কেনার কথা ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই প্রস্তাবগুলির মধ্যে রয়েছে রাফালে-এম বিমান কেনার পাশাপাশি নৌবাহিনীর জন্য ৩টি স্কোর্পিন সাবমেরিন। এই সময়ে, ফ্রান্স ভারতকে আরও কিছু অস্ত্র সরবরাহের বিষয়েও বড় ঘোষণা করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফ্রান্স সফরের সময়, ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য রাফালে এম যুদ্ধবিমান সম্পর্কিত একটি চুক্তি ঘোষণা করা হতে পারে। ফ্রান্সের কাছ থেকে এই ধরনের ২৬টি যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব রয়েছে।
দুদিনের সফরে ফ্রান্সে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ১৪ জুলাই ফ্রান্সের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এটি বাস্তিল ডে প্যারেড নামেও পরিচিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে এই কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে মোদীর এই ফ্রান্স সফর। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর একটি দলও এই কুচকাওয়াজে অংশ নেবে, যেখানে সমগ্র বিশ্ব ভারতীয় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর শক্তি এবং দক্ষতা দেখতে পাবেন।