Advertisment

নেহরুর বিমান রুখতে পালটা বিমান পাঠিয়েছিল ইজরায়েলিরা, ভয়ংকর সেই ঘটনার সাক্ষী গাজা!

যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারত চরম কোনও ঘটনা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
military digest UN Nehru

ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ১৯৬০ সালের মে মাসে গাজায় রাষ্ট্রসংঘের জরুরি বাহিনীর (ইউএনইএফ) পরিদর্শনে। (ছবি সৌজন্য- রাষ্ট্রসংঘের আর্কাইভস)

ভারত রাষ্ট্রসংঘের আরব-ইজরায়েল শান্তি প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের মধ্যে বর্তমান সংঘর্ষের স্থল হল গাজা। ১৯৫০ থেকে ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত রাষ্ট্রসংঘের জরুরি বাহিনীর (ইউএনইএফ) তত্ত্বাবধানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষী বাহিনীর একটি শক্তিশালী দল গাজায় ছিল। ১৯৬০ সালের ১৯ মে, সেখানে একটি বিরাট ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় ইজরায়েলি বিমান বাহিনীর বিমান গাজায় ইউএনইএফ পরিদর্শনে যাওয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর বিমানকে গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়েছিল। সেই সময়ে ইউএনইএফের কমান্ডার ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্রেম সিং গিয়ানি। তিনি ঘটনাক্রমে, রেজিমেন্ট অফ আর্টিলারিতে কমিশনপ্রাপ্ত প্রথম ভারতীয় অফিসার ছিলেন। এছাড়াও তিনিই প্রথম ভারতীয় অফিসার যিনি আর্টিলারি ফিল্ড রেজিমেন্টের নেতৃত্বও দেন। রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশে ইয়েমেনে যাওয়ার আগে তিনি ১৯৫৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৬৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত গাজায় ইউএনইএফের কমান্ডার ছিলেন।

Advertisment

কমনওয়েলথে প্রধানমন্ত্রীদের সম্মেলন থেকে ফেরার পথে নেহেরু গাজা সফর করছিলেন। গাজায় অবতরণের জন্য রাষ্ট্রসংঘের বিমানের অল্প সময়ের জন্য ইজরায়েলি ভূখণ্ড অতিক্রম করার প্রয়োজন ছিল। এই ধরনের কোনও রুটিন ফ্লাইটের আগে আনুষ্ঠানিক তথ্য দেওয়া হয়নি। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে নেহরুর আসন্ন সাক্ষাতের কথা আরব দেশ এবং ইজরায়েলের বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল। বিদেশ মন্ত্রকের নথি অনুযায়ী, নেহরুর বিমান ওড়ার সময় ইজরায়েলি বিমান বাহিনীর দুটি মিস্টার জেট ফাইটার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী রাষ্ট্রসংঘের বিমানকে বাধা দেয়। তবে, বিষয়টি যেহুতু রাষ্ট্রসংঘের ব্যাপার। তাই ভারত গোটা বিষয়ে মতামত প্রকাশ করা থেকে বিরত ছিল। এই ঘটনার পরের দিন, রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব ড্যাগ হ্যামারস্কজোল্ড ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে চিঠি লিখে ব্যাখ্যা করেছিলেন। একইসঙ্গে ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন।

আরও পড়ুন- ইউক্রেন থেকে গাজা, ঠিক কোন কূটনৈতিক পথে ভারত?

পালটা লেফটেন্যান্ট জেনারেল গিয়ানি ইজরায়েলিদের দোষারোপ করে এই ঘটনার ওপর একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন। জবাবে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেন গুরিয়ন লেফটেন্যান্ট জেনারেল গিয়ানিকে নিয়ে ঘৃণ্য মন্তব্য করেছিলেন। ইজরায়েলিরা আরও দাবি করেন যে ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীর রাডার স্ক্রিনে রাষ্ট্রসংঘের বিমানের সঙ্গে চারটি মিগ বিমান উড়তে দেখা গিয়েছিল। আর, সেই কারণে ইজরায়েলি বিমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মিগ বিমান আটকানোর। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবকে আরও জানান যে ইজরায়েলি বিমানবাহিনী রাষ্ট্রসংঘের বিমানে থাকা ব্যক্তিদের সম্পর্কে কিছু জানতেন না। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার যে, ইজরায়েল রাষ্ট্রসংঘের ওপর দোষ চাপানোর জন্য অজুহাতগুলো দিয়েছিল। যেহুতু রাষ্ট্রসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিমান সম্পর্কে ইজরায়েলিদের অবহিত করেনি, সেই কারণে এসব বলেছিল।

Gaza Strip Israel-Palestine clash Jawaharlal Nehru
Advertisment