PM Modi’s tightrope: মোদী নিজে স্বীকার করেছেন তাঁর মস্কো সফরে নজর গোটা বিশ্বের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কূটনৈতিক ভাবে যুদ্ধের মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি শিশু হাসপাতালে সন্দেহভাজন রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের একদিন পর, মোদী পুতিনকে বলেছিলেন যে নিষ্পাপ শিশুদের মৃত্যু "বেদনার এবং এতে হৃদয় ব্যাথিত হয়", "বোমা, বন্দুক এবং বুলেটের মধ্যে শান্তি আলোচনা সফল হয় না। যুদ্ধে সমাধান কখনই আসবে না"।
মোদী এক্স-এ পোস্টে উল্লেখ করেছেন, "আপনি গতকাল এত খোলামেলাভাবে কথা হয়েছে যেখানে কোন রকমের রাখঢাক ছিল না। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলতে পারি যে ভারত শান্তির পক্ষে এবং ইউক্রেনের সংঘাতের অবসানে অবদান রাখতে প্রস্তুত এবং আমি বলতে পারি যে প্রেসিডেন্ট পুতিনের কথা শোনার পর, আমার মনে যুদ্ধ বন্ধের আশা আরও জোরালো হয়েছে"। গত কয়েক বছর ধরে চলমান যুদ্ধ, সংঘাত ও সন্ত্রাসের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবারের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
"গত বছর, রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ৬৬ % বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ২০২৪ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে আরও ২০% বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মোদী। মোদী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মস্কোতে তার সফর শেষ করে অস্ট্রিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন, ৪১ বছর পর সেই দেশে কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এটাই প্রথম সফর।
রাশিয়ায় গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৫ ভারতীয়ের। ভারতীয়দের এ ভাবে ভুল বুঝিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া নিয়ে তাঁর উদ্বেগের কথা পুতিনকে জানিয়েছেন মোদী। এরপরই বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস রুশ প্রেসিডেন্টের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্রেমলিনে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে ব্যবসা, বাণিজ্য, নিরাপত্তা, কৃষি, প্রযুক্তি, মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু দেশের সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এক্স এক পোস্টে মোদী উল্লেখ করেছেন, "আজ ক্রেমলিনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন। আমাদের আলোচনায় ভারত-রাশিয়া সহযোগিতার ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য কে কীভাবে বাড়ানো যায় তার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে"
তিনি উল্লেখ করেন যে দুই দেশের মধ্যে ২৫ বছর ধরে আলোচনা চলছে। তবে এবার মোদীর রাশিয়া সফরের দিকে নজর গোটা বিশ্বের।
সন্ত্রাসবাদ যে "ভয়াবহ এবং ঘৃণ্য" তা উল্লেখ করে, প্রধানমন্ত্রী মোদী উল্লেখ করেছেন যে ভারত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসবাদের। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা করেছেন।
মোদী এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছেন, "গত ৪০-৫০ বছরে, ভারত সন্ত্রাসবাদের মুখোমুখি হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ কতটা ভয়ঙ্কর এবং জঘন্য তা ভারত ভালোভাবেই জানে। আমরা গত ৪০ বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করছি। আমি সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা জানাই,”
যুদ্ধ কোন সমাধান ডেকে আনতে পারে না বলে জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, "একজন বন্ধু হিসেবে আমি সবসময় বলেছি যে আমাদের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যতের জন্য শান্তিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু আমি এটাও জানি যুদ্ধ কোন রকমের সমাধান আনতে পারে না । যুদ্ধক্ষেত্রে বোমা, বন্দুক ও গুলির মধ্যে শান্তি আলোচনা সফল হয় না এবং শান্তির পথ অবলম্বন করতে হবে"।
আরও পড়ুন - Mumbai BMW hit-and-run: পুলিশের জালে মূল অভিযুক্ত, মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠের ছেলেকে ফিল্মি কায়দায় গ্রেফতার!
সূত্র জানিয়েছে দুই দিনের সফরে মস্কোতে থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী মোদী নৈশভোজে যুদ্ধে ভারতীয়দের মৃত্যুর বিষয়টি উত্থাপন করেছেন, রাশিয়া তাদের সেনাবাহিনীতে কর্মরত সমস্ত ভারতীয়দের অবিলম্বে মুক্তি দিতে এবং তাদের প্রত্যাবর্তনের সুবিধা দিতে সম্মত হয়েছে।
নৈশভোজে পুতিন তৃতীয় মেয়াদে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে অভিনন্দন জানান এবং ভারতীয় অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান উন্নতিতে মোদীর প্রশংসা করেন।
রাশিয়া, ভারতে সামরিক খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ দ্রুত করতে সম্মত হয়েছে। যদিও শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় সামরিক অবশ্য মন্তব্য করেছেন, রক্ষণাবেক্ষণ সহায়তার বিলম্ব সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল প্রস্তুতিকে কোনভাবেই প্রভাবিত করেনি।
আধিকারিকদের মতে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সরবরাহ থমকে যেতে থাকে। ভারত দেশীয় উত্সের পাশাপাশি পোল্যান্ড এবং জর্জিয়ার মতো দেশগুলি থেকে অতিরিক্ত জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে চাইছে।