Shakespeare Sarani Murder: শেক্সপিয়র সরণির বহুতলে বৃদ্ধা খুনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ধৃত মূল অভিযুক্ত দুধকুমার ঢল। মঙ্গলবার রাতে ডানকুনি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে দুধকুমারকে চিহ্নিত করেন গোয়েন্দারা। তারপরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রেণুকা দেবীরর গয়না, নগদ লুঠ করতেই এই খুন। আলমারির চাবি, মূল দরজার চাবি এবং বৃদ্ধার হাতের হিরের আংটি এবং দুটি মোবাইলের কোনও খোঁজ নেই। আর কী কী খোওয়া গিয়েছে, মৃতার ছেলে অভয়ের সঙ্গে কথা বলে তালিকা তৈরি করছে পুলিশ।
এদিন আবার ধৃতকে ঘটনাস্থলে নিয়ে এসে পুনর্নির্মাণ করেছেন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের অনুমান, সোমবার সারা সন্ধ্যা আবাসনের কোথাও লুকিয়ে ছিলেন অভিযুক্ত। রাতের দিকে সুযোগ বুঝে বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে এবং গয়না-মোবাইল নিয়ে চম্পট দেন অভিযুক্ত। ২০১৬-২০১৮ পর্যন্ত চৌধুরী পরিবারের গাড়ির চালক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। চুরির দায়ে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। সোমবার যখন আবাসনে ঢুকছিলেন অভিযুক্ত, তখন আবাসনের সম্পাদক-সহ অনেকেই তাঁকে দেখেন। জিজ্ঞাসা করা হলে দুধকুমার জবাব দেন, ‘মা-জি (রেণুকা চৌধুরী) ডেকেছেন।' একই কথা রবিবার বৃদ্ধার ছেলেকে জানান অভিযুক্ত। রবিবার মৃতার সঙ্গে কথাও বলেন দুধকুমার।
পুলিশে ধারণা পরের দিন সোমবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তাঁকে শেষবার ওই আবাসনে দেখা গিয়েছে। সিসিটিভিতে সেই দৃশ্য ধরাও পড়ে। তারপর থেকে আর বেরোননি তিনি। আবাসনের কোথাও বা বৃদ্ধার ফ্ল্যাটে ঘাপটি মেরে ছিলেন। রাতের দিকে পরিবারের লোক ঘুমিয়ে পড়লে সুযোগ বুঝে দুষ্কর্ম সারেন দুধকুমার।
তারপরেই মূল গেটের চাবি হাতিয়ে চম্পট দেন তিনি। এদিকে, মঙ্গলবার সকালে ফ্ল্যাটের ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলে এসে মৃতার ছেলে দেখেন রেণুকা দেবী এখনও ঘুমিয়ে। তাতেই সন্দেহ হয় অভয়ের। বৃদ্ধার ঘরে গিয়ে দেখেন অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে নবতিপর বৃদ্ধা। বালিশ ভিজে গিয়েছে রক্তে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য পারিবারিক চিকিৎসককে ডাকা হলে, তিনি মৃত ঘোষণা করেন রেণুকা দেবীকে। এরপরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) মুরলিধর শর্মা, ডিসি ডিডি (স্পেশাল) দেবস্মিতা দাস এবং ডিসি (সাউথ ) আকাশ মাঘারিয়া।
শেক্সপিয়ার সরণি থানার পাশাপাশি লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। এরপরেই আবাসন এবং আশপাশের একাধিক সিসিটিভি খতিয়ে দেখে দুধকুমারকে চিহ্নিত করে গোয়েন্দারা। তাঁকে শনাক্ত করেন বৃদ্ধার ছেলে অভয়। তারপরেই তাঁকে গ্রেফতারে তোরজোড় শুরু হয়। গোয়েন্দারা জানতে পারেন, সোমবার সন্ধ্যার পর ফের একবার রাত ১২টার পর দুধকুমারকে ওই আবাসনে দেখা গিয়েছিল। মাঝের ৪-৫ ঘণ্টার মিসিং লিঙ্ক খুঁজতেই জেরা চলছে অভিযুক্তকে।
তবে যদি ফ্ল্যাটের ঘরেই লুকিয়ে থাকেন অভিযুক্ত, তাহলে তাঁকে দরজা খুলে দিয়েছিলেন পরিচারক। তাই তাঁর ভুমিকাও খতিয়ে দেখা হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন