প্রধান বিচারাপতি এন ভি রামানার নিশানায় এবার পুলিশ, সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থা। বিচারপতিদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিচারবিভাগকে এইসব তদন্তকারী সংস্থাগুলো সহায়াতা করে না বলেই প্রধান বিচারপতির মূল অভিযোগ। এমনকী নিম্ন আদালতের বিচারকরা খুন, হুমকি পাওয়ার পর অভিযোগ জানালেও সিবিআই সহ নানা সরকারি তদন্তকারী এজেন্সিগুলো সাড়া দেয় না বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এন ভি রামানা।
সম্প্রতি ফাঁকা রাস্তায় অটোর ধাক্কার ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে জেলা ও অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক উত্তম আনন্দের মৃত্যু হয়েছে। একে নিছক দুর্ঘটনা বলে মানতে নারাজ আনন্দের পরিবার। তাঁদের দাবি বিচারককে খুন করা হয়েছে। এই মৃত্যুর ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা চলছে। শুক্রবার এই মামলার প্রেক্ষিতেই প্রধান বিচারপতি বলেছেন, "এমন অনেক মামলা চলছে যেগুলোতে গ্যাংস্টার, প্রবাবশালী ব্যক্তিরা অভিযুক্ত। এই সব মামলার প্রেক্ষিতে নিম্ন আদালতরে বিচারকদের অনেকর সময় হুমকি দেওয়া হয়ে থাকে। মানসিকভাবে কমজোড়ি করে দিতে হোয়াটঅ্যাপ, এসএমএস, এমনকী সোশাল মিডিয়া মারফতও হুমকি দেওয়া হয়। তদন্তের জন্য এমেক সময় সিবিআই-কে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা কিছুই করে না।"
রীতিমতো উদাহরণ টেনে অ্যাটর্নি জেলারেল কে কে বেণুগোপালকে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, "সিবিআই-য়ের মানসিকতায় কিছু বদল আশা করেছিলাম। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি তেমন কিছুই হয়নি।" অ্যাটর্নি জেনারেলকে ধানবাদের বিচারক মৃত্যুর ঘটনায় সহায়তার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিরূপ আদেশ দিলেই বিচারবিভাগকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ প্রধান বিচারপতির। এই ধরণের ঘটনাকে "দেশে নয়া প্রবণতা" বলে জানিয়েছেন তিনি। এন ভি রামানার কথায়, "দেশে এটা একটা নয়া প্রবণতা। বিরূপ আদেশ জারি হলেই বিচারবিভাগকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে। বিচারকরা যদি পুলিশ বা সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন, তখন তারা সাড়া দেয় না। সিবিআই বা তদন্তকারী সংস্থাগুলো বিচারবিভাগকে সহায়তা করে না।" এই অভিযোগ নিজের দায়িত্বে সচেতনভাবে তিনি করছেন বলেও জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
'দেশের ব্যর্থতা'র কারণেই ধানবাদে জেলা ও অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক উত্তম আনন্দের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করেন জবল বেঞ্চের অন্য সদস্য বিচারপতি সূর্য কান্ত। কয়লা মাফিয়াদের অঞ্চলে কেন বিচারকদের আবাসন ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়নি তা নিয়ে প্রস্ন তুলেছেন বিচারপতি। সূর্য কান্ত।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে হামলার শিকার হওয়া বিচারপতি, বিচারকদের একটি তালিকা রয়েছে। যেখানে অভিযোগের প্রেক্ষিতে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই উত্তর দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। ঝাড়খণ্ডের অ্যাডভোকেট জেনারেল রাজীব রঞ্জন বেঞ্চকে জানিয়েছেন, রাজ্য বিচারকদের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে এবং সীমানা প্রাচীরও তৈরি করেছে কিন্তু বর্তমানে এগুলোর অস্তিত্ব নেই।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন