/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/09/hathras-1.jpg)
পুলিশ জোর করেই গভীর রাতে কোনও মতে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে হাথরসের নিগৃহীতার। বাংবার অনুরোধ সত্ত্বেও দেহ শেষবারের মতো বাড়িতে আনার অনুমতি দেননি পুলিশ। ভেজা চোখে অভিযোগ করলেন হাথরসের দলিত নিগৃহীতা তরুণীর ভাই। কড়া পুলিশি ঘেরাটোপে মঙ্গলবার রাত তিনটের সময় তরুণীর শেষকৃত্য করা হয়।
রাত সাড়ে তিনটের সময় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে নিগৃহীতা তরুণীর ভাই বলেন, 'গভীর রাতে বোনের দেহ অ্যাম্বুলান্সে করে দি্লির হাসপাতাল থেকে হাথরসে নিয়ে আসা হয়। দেখা যাচ্ছে যে আমার বোনের শেষকৃত্য হয়েছে। কিন্তু, পুলিশ আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা অনুরোধ করেছিলাম যাতে শেষবারের মতো দেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু, পুলিশ আমাদের সেই অনুরোধ রাখেনি।'
মঙ্গলবার রাত বাড়তেই দেহ সৎকার কে কেন্দ্র করে মৃতার বাড়ির লোকেদের সঙ্গে পুলিশের দড়ি টানাটানি শুরু হয়। রাত একটা নাগাদ মৃতার ভাই জানান, 'অ্যাম্বুলান্সে করে দেহ বড় রাস্তায় নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু দেহ বাড়িতে আনতে দেওয়া হচ্ছে না।তারা শ্মশানের আলো জ্বালিয়ে আমাদের তখনই বোনের শেষকৃত্য করতে বাধ্য করছে। আমরা মাঝরাতে শেষকৃত্য করতে রাজি নই। আমরা বোনের দেহ বাড়িতে নিয়ে যেতে চাই।' এই কথা যখন নিগৃহীতার ভাই বলছিলেন তখনও মৃত্রা বাবা দিল্লি থেকে বাড়ি ফিরতে পারেননি। 'কেন এত তাড়াহুড়ো?' জানতে চাইছিলেন শোকসন্তপ্ত তরুণীর ভাই।
এর প্রায় দু'ঘন্টা পর মৃতা দলিত তরুণীর ভাই পুলিশের বিরুদ্ধে জোর করে শেষকৃত্য সম্পাদনের অভিযোগ তোলেন। বলেন, 'পরিবার এখন এইভাবে সৎকার করতে রাজি না হওয়ায় প্রায় বল প্রয়োগ করছে পুলিশ। আত্মীয়রা যখন দেখতে গিয়েছেন দেহ নিয়ে ওরা কি করছে তখন আমাদের লোকেরদের মারধর করেছে পুলিশ। এতে মেয়েদের চুরি ভেঙে গিয়েছে। তাই ভয়ে আমরা গৃহবন্দি। কেন যে ওরা এইরকম করছে?'
আরও পড়ুন- আইপিএলের মধ্যেই হাথরস গণধর্ষণের বিচার চেয়ে বিরাট-গর্জন
একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তরুণীর মা পুলিশের কাছে মেয়ের দেহ বাড়িতে আনার জন্য অনুরোধ করছেন।
মঙ্গলবার সকালে নয়াদিল্লির হাসপাতালে গণধর্ষণ ও চূড়ান্ত শারীরিক নিগ্রহের শিকার দলিত তরুণীর মৃত্যুর পরে থমথমে হয়ে ওঠে হাথরাসের বুলগাড়ি গ্রামের পরিবেশ। উচ্চ শ্রেণিভুক্ত ঠাকুর ও দলিতদের নিয়ে গড়া এই গ্রামে যাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে, সে দিকে নজর রাখছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই উচ্চবর্ণের চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ দিকে, দলিত তরুণীর ধর্ষণ ও মৃত্যুতে মঙ্গলবার হাথরাস শহরে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে দফায় দফায়। কংগ্রেসের তরফে মোমবাতি মিছিল হয়। এই নৃশংস, পাশবিক ঘটনার জন্য যোগী প্রশাসনকেই দায়ী করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
হাথরসের যুগ্ম ম্যাজিস্ট্রেট প্রেম প্রকাশ মীনা জানিয়েছেন, 'তরুণীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। অপরাধীদের শাস্তি হবেই, ইতিমধ্যেই পুলিশ ও প্রশাসন এই আশ্বাস দিয়েছে।' পরিবারের ইচ্ছায় শেষকৃত্য হয়েছে বলে মঙ্গলবার রাত ২.১৬ নাগাদ টুইটে জানায় হাথরস পুলিশ।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন