ধর্মীয় পতাকা অবমাননার জেরে হিংসা, ভস্মীভূত দোকানপাট-যানবাহন! জামশেদপুরে ১৪৪ ধারা। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবাও। জামশেদপুরের শাস্ত্রী নগরে ধর্মীয় পতাকার অবমাননার জেরে ছড়িয়ে পড়ে হিংসার ঘটনা।
রবিবার গভীর রাতে হিংসার ঘটনায় হঠাৎই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মধ্যে তুমুল পাথর ছোড়াছুড়ি হয়। এইসময় বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগও করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তার ধারে একাধিক দোকানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি ও অটোরিকশাকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ।
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইটবৃষ্টি। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এরপর পুলিশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। হিংসা সামাল দিতে গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশকর্মী। দীর্ঘক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জেলার এসএসপি জানান, হিংসার ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার জেরে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।
রাম নবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে জামশেদপুরের শাস্ত্রী নগর এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হিংসাত্মক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে সেই সময় পুলিশ-প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু হঠাৎ করেই রবিবার গভীর রাতে ধর্মীয় পতাকা অবমাননাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। এর পরই দুই গোষ্ঠীর সদস্যরা একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে।
রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গাড়ি ও দোকানেও অগ্নি সংযোগ করা হয়। রবিবার গভীর রাতে জেলার এসএসপি প্রভাত কুমার জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পুরো এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। চলছে পুলিশের টহলদারিও।
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে RAF এর একটি কোম্পানি এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনায়ত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে, পূর্ব সিংভূমের ডেপুটি কমিশনার বলেছেন যে আমরা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শান্তি কমিটি ও অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। জনগণকে কোন গুজবে কান দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। উসকানিমূলক মন্তব্য বা আপত্তিকর বার্তা পাওয়া মাত্রই পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে।
শাস্ত্রী নগরের হিংসার ঘটনার জেরে রবিবার সন্ধ্যায় জারি করা হয় একাধিক নিষেধাজ্ঞা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিক্ষুদ্ধ জনতা দুটি দোকান ও একটি অটোরিকশায় ও বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশসূত্রে খবর, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। শাস্ত্রী নগরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পূর্ব সিংভূম জেলার ডেপুটি কমিশনার বিজয়া যাদব বলেছেন কিছু মানুষ এলাকায় শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এই ধরণের ষড়যন্ত্র বাঞ্চাল করতে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।