Advertisment

রক্ষকই ভক্ষক, মুসলিম যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক কেন, প্রশ্ন তুলে তরুণীকে মার পুলিশের

তাঁদের পাঠানো হয়েছিল জনতার হাতে আক্রান্ত এক মহিলা ও তাঁর মুসলিম বন্ধুকে উদ্ধার করতে। সেখানে গিয়ে পুলিশের সেই দলটি আক্রমণকারী হয়ে উঠল। এ ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মীরাটে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

তাঁদের পাঠানো হয়েছিল জনতার হাতে আক্রান্ত এক মহিলা ও তাঁর মুসলিম বন্ধুকে উদ্ধার করতে। সেখানে গিয়ে পুলিশের সেই দলটি আক্রমণকারী হয়ে উঠল। এ ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মীরাটে। যে জনতার হাতে ওই দুজন আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন এক বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীও। উদ্ধার করার জন্য গাড়িতে তুলে, সেই গাড়ির মধ্যে তরুণীকে মারধর করা ভিডিও ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে এক পুলিশকর্মী মুসলিম ধর্মাবলম্বীর সঙ্গে তরুণীর সম্পর্কের কথা তুলে তাকে টিটকিরি দিচ্ছেন এবং আরেক পুলিশকর্মী তরুণীকে মারছেন।

Advertisment

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একজন পুলিশ কর্মী গাড়ি চালাচ্ছেন, এক তরুণী, স্কার্ফে যাঁর মুখ ঢাকা রয়েছে, তিনি রয়েছেন গাড়ির পিছনে, তাঁর পাশেই বসে রয়েছেন এক মহিলা পুলিশকর্মী। এক পুরুষ কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে, ‘‘লজ্জা করে না?’’ আর তার সঙ্গে সঙ্গেই দেখা যাচ্ছে তরুণীর মাথায় একের পর এক থাপ্পড় মেরে চলেছেন মহিলা কনস্টেবল।

আরও পড়ুন: আধার কি অসাংবিধানিক? আজ রায় সুপ্রিম কোর্টে

গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিজের ভাড়া বাড়িতে ওই তরুণীকে নিয়ে যান তাঁর বন্ধু। তারপরেই তাঁর বাড়িতে হানা দেয় একটি নজরদারি দল। তাদের হানা থেকে বাঁচতে খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

এ ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই   উত্তর প্রদেশ পুলিশ তিন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করেছে, দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এক হোমগার্ডকে।

মীরাটের এস পি সিটি রণবিজয় সিং জানিয়েছেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ থানার আওতায় এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, যে দুজনকে নিয়ে এত ঘটনা, সেই ২০ বছরের হিন্দু তরুণী ও ২২ বছরের মুসলিম তরুণ, দুজনেই নার্সিংয়ের ছাত্র।

সিং জানান, “ছেলেটি কলেজ হস্টেলে থাকত না, এদিন জাগৃতি বিহারে ছেলেটির আবাসনে যায় মেয়েটি। সেখানেই কিছু মানুষ জমায়েত হয় এবং ঝামেলার সৃষ্টি করে। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে এবং প্রতিরক্ষার জন্য ভ্যানে তুলে নিয়ে যান ওই ছেলেমেয়ে দুটিকে। এ বিষয়ে কোনও এফআইআর দায়ের করতে চায়নি তাঁদের অভিভাবকও। দাবি, পুলিশ এ বিষয়ে কোনও অভিযোগও নিতে চায়নি।

তিনি আরও বলেন যে, সেখানে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো বেশ কিছু সংগঠনও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু তারাই উপস্থিত সংগঠন তারাই একমাত্র কিনা তা নিশ্চিত করা যায়নি এখনও। তিনি বলেন, ভিজিল্যান্ট গ্রুপের মতে, ওই দুজনকে ঘনিষ্ট অবস্থায় দেখা যাওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল।

“মঙ্গলবার এই ভিডিওটি আমাদের চোখে পড়ে, পুলিশ স্টেশনের SHO-র মারফত নিশ্চিত করা হয় ২৩ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ ঘটনার দিনত্কনস্টেবল মেয়েটিকে মারধর করে। জানা গিয়েছে, যে মহিলা কনস্টেবলকে মেয়েটির বাঁচানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল’’

সিং-এর কথা অনুযায়ী “মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ স্টেশনে কর্মরত ছিলেন ওই কনস্টেবল, আমরা একঘণ্টার মধ্যেই ওদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছি।” পুলিশ সূত্রে খবর সেলেক চাঁদ, নীতু সিং এবং প্রিয়াঙ্কা নামে ওই তিন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং হোম গার্ডকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি এই বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।

Advertisment