ত্রিপুরার উপজাতি এলাকা খুমুলুংয়ে পুলিশ ও নেসো সমর্থক ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন জখম হয়েছে। আহতদের দেহে বুলেটের আঘাত লেগেছে।
ছাত্র সংগঠন নেসো (নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন) উত্তর পূর্বের ৮ রাজ্যে ভোর ৫ টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলের বিরুদ্ধে বনধের ডাক দেয়।
আরও পড়ুন, স্টারলাইট প্লান্ট খোলার ব্যাপারে পরিবেশ আদালতের নির্দেশে সুপ্রিম সমর্থন
নেসোর অধীন তিপুরা স্টুডেন্টস ফেডারেশন এই বনধের সপক্ষে পশ্চিম ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে। কিছুক্ষণ পর ধর্মঘটীরা বেশ কিছু দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং পরে চার রাউন্ড গুলি চালায়। চারজনের শরীরে বুলেটের আঘাত লেগেছে বলে অভিযোগ। আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ পন্থ হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
ত্রিপুরা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ জিরানিয়া মহকুমার দশরমপাড়া এলাকায় ৮ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিলেন বনধ সমর্থকরা। পরে, বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিক্ষোভ শুরু হয় মাধববাড়ি এলাকায়।
তিনি বলেন, জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ওরা টায়ার জ্বালাচ্ছিল, বিশৃঙ্খল পিরস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছিল। স্থানীয় প্রশাসন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা সত্ত্বেও বিক্ষোভ চলছিল। বেলা দেড়টা নাগাদ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। এর কিছু পরেই বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি স্থানীয় দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার অজিত প্রতাপ সিং জানান, বিক্ষোভকারীরা হিংসাত্মক হয়ে ওঠে, বেশ কয়েকটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং জাতীয় সড়কও অবরোধ করা হয়। এর জেরে পুলিশকে মৃদু লাঠি চার্জ করতে হয় এবং শূন্য গুলি চালাতেও বাধ্য হয় পুলিশ। তিনি জানিয়েছেন আহতদের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, তবে আহতদের সংখ্যা নিয়ে তিনি মুখ খুলতে চাননি।
জানা গিয়েছে, দুজন ধর্মঘট সমর্থককে বুলেটের ক্ষত সমেত আগরতলার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া লাঠির আঘাতে আহত কয়েকজনকেও আগরতলার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জিরানিয়া থানার ওসি সৌমেন দাস জানিয়েছেন, সংঘর্ষে ২-৩জন পুলিশকর্মীও আহত হয়েছেন।
টিএসএফের সাধারণ সম্পাদক সুনীল দেববর্মার অবশ্য অভিযোগ, ঝামেলা শুরু হয় এলাকায় আরএসএস এবং বিএমএস সমর্থকরা পৌঁছনোর পর। তারা ধর্মঘটীদের উদ্দেশে কটুকাটব্য করে বলে অভিযোগ।
তাঁর অভিযোগ, কিছু ছেলেমেয়ে এ ঘটনায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে, তার জেরেই এই ভাঙচুর হয়ে থাকতে পারে।
সুনীল বলেছেন, পুলিশ হত্যার উদ্দেশ্যে বিক্ষোভকারীদের দিকে তাক করে গুলি চালিয়েছে। তিনি বলেছেন, চারজনের শরীরে গুলি লেগেছে। এদের দুজনকে খুমলং হাসপাতাল থেকে জিবিপি হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু টিএসআরের বেশ কিছু জওয়ান গাড়ি থামিয়ে আহতদের ফের বিক্ষোভস্থলে পাঠিয়ে দেয়। পরে পুলিশ সুপার এসে আহতদের গোবিন্দ বল্লভ পন্থ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।