BMC Fund for Development: দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বই। এই শহরের পুরনির্বাচন গত দু'বছর আগে হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। শুধু তাই নয়। শহরের কোন অংশের উন্নয়ন হবে, তা বর্তমানে সম্পূর্ণরূপেই নির্ভর করছে, বিধায়ক কোন দলের, তার ওপর। বিধায়ক শাসক দলের হলে, তিনি উন্নয়নের জন্য অর্থ পাবেন। কিন্তু, বিরোধী হলেই তাঁর এলাকায় উন্নয়নের সুযোগ বন্ধ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের অন্তর্তদন্তে উঠে এল সেই তথ্য।
- বিএমসিতে নির্বাচিত কর্পোরেটর বা কাউন্সিলরের সংখ্যা ২২৭ জন।
- বৃহম্মুম্বই কর্পোরেশন এলাকায় মোট ৩৬ জন বিধায়ক আছেন।
- বিএমসিতে নির্বাচন না-হওয়ায় বর্তমানে পরিচালনা করছেন এক প্রশাসক।
মুম্বইয়ে মোট ৩৬ জন বিধায়ক আছেন। তার মধ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি-শিন্দে (শিবসেনা) জোটের ২১ জন। আর, বিরোধীদের ১৫ জন। ফেব্রুয়ারি ২০২৩ অনুযায়ী, বিধায়করা নাগরিক পরিষেবা দেওয়ার জন্য বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি)-এর কাছে অর্থ চেয়েছিলেন। শাসক জোটের ২১ বিধায়ক ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অর্থ পেয়েছেন। অভিযোগ যে, অর্থবরাদ্দের জন্য আবেদন করেও বিরোধী বিধায়কদের কেউই তা পাননি।
পরিসংখ্যান বলছে, বিরোধীদের ১৫ জন বিধায়কের (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে শিবসেনা ও কংগ্রেসের) মধ্যে ১১ জন মুম্বইয়ের উন্নয়নের জন্য বিএমসির কাছে টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁদের মধ্যে একজনকেও বরাদ্দ অর্থ দেওয়া হয়নি। আর, এই সত্যিটা ধরা পড়েছে তথ্যের অধিকার আইন অনুযায়ী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের অন্তর্তদন্তে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বিরোধী ১৫ বিধায়কের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেছে। যাচাই করেছে, ওই বিধায়করা তহবিলের জন্য আবেদন করেছিলেন কি না!
অথচ, উন্নয়নের জন্য অর্থ বিরোধী বিধায়কদেরও দেওয়া হলে, তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেত। ধারাভিতে ড্রেন মেরামতির কাজ করা যেত। সেউড়িতে পার্কের সৌন্দর্যায়ন করা যেত। সত্যনারায়ণ চালে পেভার ব্লক তৈরি করা যেত। কেন এই একচোখা নীতি? আদৌ কি এমন পক্ষপাতিত্ব আইনসঙ্গত? এসব সম্পর্কে জানতে বিএমসি কমিশনার তথা প্রশাসক আইএস চাহালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু, মেইলে পাঠানো একটি প্রশ্নপত্রের জবাব তিনি দেননি। অবশ্য, গত বুধবার জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সেই মেইল পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন- বিরোধীদের চোখে এখন, নীতীশ ‘আয়া রাম, গ্যয়া রাম’! কোথা থেকে এল এই শব্দ?
বিএমসিতে নির্বাচিত কর্পোরেটর বা কাউন্সিলরের সংখ্যা ২২৭ জন। দেশের সবচেয়ে ধনী পুরসভা বিএমসি। গত বছর ২০২৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, বিএমসির বাজেট পেশ হয়। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি, বিএমসি একটি প্রস্তাব পাশ করে। তাতে বলা হয় যে, শহর পরিচালনার জন্য তহবিল বরাদ্দ করা হবে। বরাদ্দ অর্থ পাবেন মুম্বইয়ের ৩৬ জন বিধায়ক। তাঁদের বিধানসভা এলাকায় উন্নয়ন করার জন্য ওই তহবিল বরাদ্দ করা হবে। সেই অনুযায়ী, বিএমসির ১,২৬০ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ হয়। যা, এই পুরসভার বাজেটের ২.৫ শতাংশ। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, তারপর থেকে গত ১০ মাস ধরে বেছে কেবল শাসক বিধায়কদেরকেই বরাদ্দ অর্থ দেওয়া হয়। বিরোধী বিধায়করা সম্পূর্ণ বঞ্চিতই থেকে যান।