Advertisment

ভারতীয় ভুখণ্ডে এসে ঘাঁটি গেঁড়ে পরপর দুটি জঙ্গি হামলা, পিছনে পাক মদত? NIA-এর তদন্তে চোখ কপালে

এনআইএ জানতে পেরেছে যে একই জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা জানুয়ারিতে রাজৌরির একটি গ্রামে এবং এপ্রিলে পুঞ্চ জেলায় সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা চালিয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
"Jammu and Kashmir terror attacks, Jammu and Kashmir encounter, Rajouri encounter, Kashmir unrest, Jammu and Kashmir, Jammu and Kashmir unrest, Poonch attack, Jammu attacks, indian express

এনআইএ জানতে পেরেছে যে একই জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা জানুয়ারিতে রাজৌরির একটি গ্রামে এবং এপ্রিলে পুঞ্চ জেলায় সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা চালিয়েছিল।

ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এর তদন্তে উঠে এসে চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। চলতি বছর জম্মু ও কাশ্মীরে দুটি জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের হাত ছিল। সরাসরি যোগ ছিল লস্কর-ই-তৈয়বার। পাশাপাশি ২টি ক্ষেত্রেই হামলাকারীরা ছিল একই।

Advertisment

এনআইএ জানতে পেরেছে যে একই জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা জানুয়ারিতে রাজৌরির একটি গ্রামে এবং এপ্রিলে পুঞ্চ জেলায় সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। পাকিস্তানে বসেই লস্কর-ই- তৈয়বার শীর্ষ নেতাদের নির্দেশেই ঘটে দুটি মারাত্মক জঙ্গি হামলার ঘটনা।

প্রথম সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল ১ জানুয়ারি রাজৌরি জেলার ধাংরি গ্রামে। এই হামলায় পাঁচজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়। পরদিন সকালে আরও দুজন মারা যান। গ্রামের একটি বাড়িতে লাগানো আইইডি বিস্ফোরণের মাধ্যমে এই হামলা চালানো হয়। গ্রামের মানুষজন এই আইইডির কাছাকাছি আসতেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে।

লক্ষ্য ছিল সেনা কর্মকর্তাদের টার্গেট করা

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুসারে, প্রাথমিক তদন্তে NIA জানতে পেরেছে রাজৌরিতে আইইডি লাগানোর উদ্দেশ্য ছিল যখন সেনাবাহিনীর সিনিয়র অফিসাররা গ্রামের এই বাড়িতে আসবেন, তখন একটি বিস্ফোরণ ঘটবে। তবে সেই প্ল্যান বানচাল হয়। সেনা কর্মকর্তারা গ্রামে পৌঁছানোর আগেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘট। এই বিষয়ে রাজৌরি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়ে। কিন্তু তারপর এনআইএ তদন্তভার হাতে নেয়। এই হামলার জন্য দুই ব্যক্তি লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছিলেন, যারা হামলার পর আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে গিয়েছিল।

NIA তদন্তে কী বেরিয়ে এল?

সেপ্টেম্বরে এনআইএ নিসার আহমেদ এবং মুশতাক হুসেনকে গ্রেফতার করে। দুজনেই পুঞ্চ জেলার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে ধংরি গ্রামে বিস্ফোরণে জড়িত জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে, এনআইএ জানতে পারে যে লস্কর-ই-তৈয়বার হ্যান্ডলার আবু কাতাল ওরফে কাতাল সিন্ধির সঙ্গে নিসারের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।

জম্মু ও কাশ্মীরে দুটি বড় জঙ্গি হামলার পিছনে ষড়যন্ত্র উদঘাটন করেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। চলতি বছরের জানুয়ারি ও এপ্রিল মাসে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় রক্তাক্ত হয় উপত্যকা। এর মধ্যে একটি হামলা হয়েছিল রাজৌরির ধাংরি গ্রামে। এই হামলায় সাতজন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়। দ্বিতীয় হামলাটি হয় পুঞ্চ জেলায়। হামলায় ৫ সেনা-জওয়ানের মৃত্যু হয়। এনআইএ-র মতে, এই হামলায় সরাসরি পাক যোগ সামনে এসেছে। লস্কর-ই-তৈয়বার নির্দেশেই তৈরি হয় হামলার নীল নকশা।

রাজৌরি হামলার পর স্থানীয় থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। প্রথমে পুলিশ তদন্ত করে, তারপর মামলাটি এনআইএ-র কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। তদন্তের সময়, এনআইএ জানতে পেরেছিল যে হামলা চালায় ২ লস্কর জঙ্গি। যাদের সাহায্য করেছিল জম্মু ও কাশ্মীরের কিছু স্থানীয় বাসিন্দা। এই জঙ্গিরা ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে হামলা চালানোর পর ফের এপ্রিলে হামলা চালায়।

ভারতে কে সাহায্য করছিল?

সেপ্টেম্বরে, এনআইএ রাজৌরি হামলায় সন্ত্রাসীদের সাহায্য করার অভিযোগে পুঞ্চ জেলা থেকে নিসার আহমেদ এবং মুশতাক হুসেন--কে গ্রেফতার করেছিল। তাদের দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়, এনআইএ জানতে পেরেছিল যে লস্কর-ই-তৈয়বার হ্যান্ডলার আবু কাতাল ওরফে কাতাল সিন্ধির সঙ্গে নিসারের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এর আগেও একবার গ্রেফতার হয়েছিল নিসার। এরপর জম্মু ও কাশ্মীরের জননিরাপত্তা আইনে তাকে ২ বছরের জন্য কারাবন্দী করা হয়। ২০১৪ সালে তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। এর পর নিসার দীর্ঘদিন কাশ্মীর পুলিশের ইনফরমারও ছিলেন। তবে তখন তিনি জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা ছিলেন।

এনআইএ জিজ্ঞাসাবাদের সময় নিসার বলেছিলেন যে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রাজৌরি হামলার পরে, আবু কাতাল, পাকিস্তানে বসে, তাকে ২ জঙ্গিকে থাকার ব্যবস্থা করতে বলেছিল। এর জন্য তিনি মুশতাক হুসেনকে ৭৫ হাজার টাকা দেয়। একটি গোপন ডেরায় জঙ্গিদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। জঙ্গিদের বাড়ির খাবার সরবরাহ করত সে। প্রায় ৩ মাস ধরে চলে এই কান্ড। এর পরে, এপ্রিলে পুঞ্চ জেলায় সেনা বাহিনীর ওপর হামলার ২ দিন আগে, জঙ্গিরা তার কাছ থেকে ২২টি রুটি চেয়ে নিয়েহঠাৎ আস্তানা ছেড়ে চলে যায়।

এনআইএ কী বলল?

একজন কর্মকর্তার মতে, হঠাৎ তাদের আস্তানা ছেড়ে যাওয়ার দু'দিন পরে, দুই জঙ্গি একটি সেনা কনভয়ে হামলা চালায়, যাতে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিটের পাঁচ জওয়ান শহীদ হন এবং আরও একজন আহত হন। প্রচুর প্রমাণ সংগ্রহ করার পরে, এনআইএ এখন দেখতে পেয়েছে যে উভয় ঘটনায় হামলাকারীরা একই ছিল এবং তারা পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার হ্যান্ডলার সাইফুল্লাহ ওরফে সাজিদ, আবু কাতাল ওরফে কাতালের সঙ্গে কাজ করেছিল। সিন্ধি এবং মহম্মদ কাসিমের নির্দেশে জম্মু ও কাশ্মীরে হামলা চালানো হয়েছিল।

NIA jammu and kashmir
Advertisment