জাপানে জনসংখ্যা দ্রুতহারে কমছে। বয়স্কদের সংখ্যা যেমন লাফিয়ে বাড়ছে। তেমনই একটি নতুন প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে যে ২০২২ সালে দেশটি গত ১২৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কমসংখ্যক সন্তানের জন্ম দিয়েছে। এসব নিয়ে চলতি মাসের গোড়ার দিকে জাপানের জনসংখ্যার ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনে জনসংখ্যার ক্রমশ হ্রাস পাওয়ার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্য যে মিথ্যে নয়, তা স্বীকার করে নিয়েছেন জাপানের প্রবীণ জনপ্রতিনিধি ইয়োশিহিকো ইসোজাকি। তিনি বলেছেন, 'আমরা স্বীকার করছি যে জন্মহার কমে যাওয়া একটি সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।' উদ্বেগ প্রকাশ করে অপর এক জনপ্রতিনিধি মাসাকা মোরি বলেছেন, 'আমরা যদি এভাবে চলতে থাকি, তবে দেশটিই একদিন থাকবে না।' দুই জনপ্রতিনিধির মধ্যে মোরির কথাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। কারণ, তিনি আবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার অন্যতম উপদেষ্টা।
জাপান স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত তথ্য দেখা গিয়েছে ২০২২ সালে ৭,৯৯,৭২৮টি শিশুর জন্ম হয়েছিল। একই সময়ে প্রায় ১০,৫৮,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। যদিও বিশেষজ্ঞরা এটিকে মহামারির বছরে বিয়ের সংখ্যা হ্রাসের কারণে হয়েছে বলে দাবি করেছেন। কিন্তু, এই তথ্যটি জাপানের জন্য উদ্বেগজনক। কারণ, সেখানকার জনসাধারণের গড় বয়স বর্তমানে ৪৮.৪ বছর। অর্থাৎ তাঁরা ইতিমধ্যে প্রবীণ হওয়ার দোরগোড়ায়।
আরও পড়ুন- ফিরে দেখা! তিন বছর আগে এই দিনেই অতিমারি ঘোষিত হয়েছিল করোনা
ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জাপানের শ্রমবাজার, স্বাস্থ্যসেবা এবং আর্থিক ব্যবস্থায়। টোকিওর জনসাধারণের মনেও বিষয়টি গভীরভাবে আঘাত করেছে। তার প্রমাণ হল, জাপান থেকে এই বছরের অস্কার এন্ট্রি (প্ল্যান ৭৫ শিরোনাম) পেয়েছে অতিবয়স্ক সমাজকে সামলানোর জন্য বয়স্কদের উৎসাহিত করার সরকারি পরিকল্পনা নিয়ে একটি সিনেমা। যাইহোক, এই সমস্যা কিন্তু একান্তই জাপানের। কারণ, এর প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া এবং চিনে জন্মহার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, সেটা অবশ্যই একই হারে বাড়েনি। পাশাপাশি, ইতালি এবং স্পেনের মত বিশ্বের অন্যান্য দেশেও জনসংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।