কর্মরত দুই শীর্ষস্থানীয় সরকারি আমলার বিরুদ্ধেই যৌন নিপীড়ন এবং গণধর্ষণের অভিযোগ।তদন্তে নেমে সিট জানতে পেরেছে ওই দুই আমলা প্রভাব খাটিয়ে অপরাধের সঙ্গে জড়িত একাধিক প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিলেন। তার মধ্যে রয়েছে সিসিটিভি মনিটরিং সিস্টেম।
সিট জানতে পেরেছে সরকারি আমলা জিতেন্দ্র নারায়ণ সিসিটিভি ক্যামেরার দুটি হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (HDDs) থেকে সম্পুর্ণ রেকর্ড মুছে ফেলেন। অদন্তকারীরা জানিয়েছে, গত বছরের ২১ শে জুলাই তিনি তাঁর আপ্ত সয়াহককে একজন টেকনিশিয়ানকে ফোন করতে বলেন, যিনি এসে তাঁর বেডরুম সহ একাধিক জায়গায় ইনস্টল করা সিসিটিভির রেকর্ড মুছে ফেলার চেষ্টা করেন।
সেই সময় টেকনিশিয়ান তাঁকে জানান, এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার তখন তিনি হার্ড ডিস্ক খুলে তাঁর কাছে সেটি জমা করার নির্দেশ দেন। এর মাত্র তিন দিন পরে তিনি নতুন পোস্টিং পেয়ে দিল্লি চলে যান। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই মামলায় ফোন কল রেকর্ড, রুট ম্যাপ সহ বেশ কয়েকটি ডিজিট্যাল রেকর্ড অক্ষুন্ন রয়েছে। যা তদন্তের কাজে সাহায্য করবে।
গণধর্ষণ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ভীতি প্রদর্শনের পাশাপাশি আইপিসির ২০১ নম্বর ধারায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে ২ আমলার বিরুদ্ধে। তদন্তে জানা গিয়েছে জিতেন্দ্র নারায়ণ এবং আর এল ঋষি দুজনেই ২৪শে আগস্ট, কলকাতায় গা ঢাকা দেন।
প্রমাণ লোপাটের জন্য দুই আমলার মধ্যে একজন তাঁর মোবাইল ফোনটি জলে ছুঁড়ে ফেলে দেন। আন্দামান ও নিকোবর পুলিশের বিশেষ তদন্ত দল জানিয়েছেন, প্রাক্তন মুখ্য সচিব জিতেন্দ্র নারায়ণ এবং অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং পাশাপাশি একাধিক যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
কর্মরত দুই শীর্ষস্থানীয় সরকারি আমলার বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এনে তোলপাড় ফেলে দেন এক তরুণী। দুই সরকারি আমলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন এবং গণধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন ওই তরুণী। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ১৯৯০ সালের ব্যাচের আইএএস অফিসার। ওই ব্যক্তি আন্দামান ও নিকোবর (এএন্ডএন) দ্বীপপুঞ্জের মুখ্য সচিবও ছিলেন।
আরও পড়ুন: < হামলার ছক? স্পাই বেলুনের পর আলাস্কার আকাশে ফের রহস্যজনক বস্তু, গুলি করে নামাল মার্কিন সেনা >
খোদ প্রশাসনের দুই শীর্ষকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগে আন্দামানের প্রশাসনিক মহলে বিস্তর জল্পনা-চর্চা ছড়িয়ে পড়েছে। নির্য়াতিতা তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে পোর্ট ব্লেয়ারের অ্যাবারডিন থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। পুলিশ তাঁর অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করে। এমনই খবর জানতে পেরেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। বিশেষ ওই তদন্তকারী ওই দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন একজন সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ। নির্যাতিতা তরুণীকে ইতিমধ্যেই পুলিশ প্রয়োজনীয় সব ধরণের সুরক্ষা দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই তরুণী যাঁদের নামে এই অভিযোগ এনেছেন তাঁরা হলেন জিতেন্দ্র নারায়ণ এবং আর এল ঋষি। জিতেন্দ্র নারায়ণ নামে ওই সরকারি কর্তা তিন মাস আগে তথাকথিত ওই ঘটনা ঘটার আগে পর্যন্ত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের মুখ্য সচিব ছিলেন। আর এল ঋষি আন্দামানের শ্রম কমিশনার হিসাবে কাজ করেছেন।
অভিযুক্ত জিতন্দ্র নারায়ণ ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন, এটা “অযৌক্তিক” অভিযোগ সম্পর্কে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চান না। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এই অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে একটি পাল্টা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
অভিযেগকারী ওই তরুণী যে গাড়িটির কথা পুলিশকে জানিয়েছেন সেটির রেজিস্ট্রেশন আর এল ঋষির নামেই রয়েছে বলে জানতে পেরছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। ওই নির্যাতিতা জানিয়েছেন, তাঁর অভিযোগ প্রমাণের জন্য জিতেন্দ্র নারায়নের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা উচিত। এর পরই তদন্তে নেমে চোখ কপালে সিটের।