কেরলে এক হাসপাতালে সদ্যপ্রসূতিকে বাতাসভরা ইনজেকশন দিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, ওই মহিলার স্বামীর সঙ্গে ধৃতের বন্ধুত্ব ছিল। আর, তিনি ওই মহিলার স্বামীর সঙ্গে থাকতে চাইছিলেন। সেই কারণে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বছর ৩০-এর অনুশা একজন নার্সের ছদ্মবেশে স্নেহা (২৫) নামে ওই বধূর ঘরে গিয়েছিলেন। ওই বধূ একসপ্তাহ আগে একটি শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে পাথানামথিট্টা জেলার পারুমালার এক বেসরকারি হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়েছিল। ফার্মাসি পাস অনুশা স্নেহার শিরায় বাতাস ঢোকানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। দুটি এয়ার ইনজেকশন দেওয়ার পর, অনুশার আচরণ সম্পর্কে স্নেহার মধ্যে সন্দেহ তীব্র হয়। তিনি তৃতীয় ডোজ দিতে বাধা দেন।
তিরুভাল্লার ডিএসপি এস আরশাদ জানিয়েছেন, অনুশা বেশ কয়েক বছর ধরেই স্নেহার স্বামী অরুণের বন্ধু ছিলেন। পুলিশকর্তা বলেন, 'তার উদ্দেশ্য ছিল অরুণের সঙ্গে বসবাস করা। অরুণের সঙ্গে কথা বলে নতুন মা ও শিশুর সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে যান তিনি। আমরা জানি না যে অনুশা কোথা থেকে এয়ার ইনজেকশন দেওয়ার ধারণা পেয়েছিলেন। এখনও পর্যন্ত, আমরা এই ঘটনায় অরুণের ভূমিকা রয়েছে, এমন কোনও ইঙ্গিত পাইনি।'
পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) এবং ৪১৯ (ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে প্রতারণা) ধারায় অনুশাকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে অনুশা স্থানীয় এক ফার্মেসি থেকে একটি সিরিঞ্জ কিনেছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
স্নেহার পরিবারের এক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে স্নেহার মা, হাসপাতালের আশপাশেই ছিলেন। শুধু তাই নয়, স্নেহা যে ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল, সেদিকেই হেঁটে আসছিলেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রসবোত্তর যত্নের পরে স্নেহাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল এবং সেই সময় তিনি তাঁর সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
অনুশা স্নেহার কাছে গিয়ে নিজেকে একজন নার্স হিসেবে পরিচয় দেন। দাবি করেন, তিনি কয়েকদিনের জন্য ছুটিতে ছিলেন। ঘটনার একটু বাদেই স্নেহার মা ওই ওয়ার্ডে ঢোকেন। তিনিই ওয়ার্ডের অন্যান্য কর্মীদের ঘটনাটি জানান। নার্সরা ছুটে এলে অনুশা হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। স্নেহার এক আত্মীয় জানিয়েছেন, এরপর স্নেহাকে নার্সদের কথায় আটক করা হয়। তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।
আরও পড়ুন- অযোগ্যতার কারণ তো বাতিল হয়েছে, সংসদে ফিরতে পারবেন রাহুল?
পুলিশ জানিয়েছে যে অরুণ এবং অনুশা বহু বছর ধরে বন্ধু ছিলেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের সাথে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ রাখতেন। বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর, অনুশা গত বছর পুনরায় বিয়ে করেন এবং তার স্বামী মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন। পুলিশ জানিয়েছে, স্নেহা ও অরুণ সেই বিয়েতে যোগ দিয়েছিলেন।