ভারত সরকারের গোপন নথিতে চিনের চোখ, এয়ার ইন্ডিয়া ও রিলায়েন্সকেও টার্গেট করেছে চিনা সংস্থা। তোলপাড় ফেলা খবর প্রকাশ্যে।
একটি চিনা হ্যাকার গ্রুপ ভারত সরকারের গোপন নথি হ্যাক করেছে বলে দাবি করেছে মার্কিন মিডিয়া। হ্যাকার গ্রুপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সহ ভারত সরকারের প্রধান প্রধান অফিস, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং এয়ার ইন্ডিয়ার মতো সংস্থাকে টার্গেট করেছে সেই হ্যাকার গ্রুপ এমনটাই জানা গিয়েছে।
মার্কিন মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, চিনা হ্যাকিং গ্রুপের ফাঁস হওয়া নথিগুলিতে দেখা গিয়েছে ভারত, হংকং, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রিটেন,তাইওয়ান এবং মালয়েশিয়া সহ অন্তত ২০টি দেশের সরকারি নথি হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করেছে তারা।
বুধবার ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রুপটি মাইক্রোসফ্ট, অ্যাপল এবং গুগলের মতো কোম্পানির সফটওয়্যার সিস্টেমের দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে। হ্যাকিংয়ের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত ৫৭০ টিরও বেশি ফাইল, ছবি এবং চ্যাট লগ সামনে এসেছে। যেগুলি সাংহাই ভিত্তিক iSoon নামে একটি ফার্মের।
ফাঁস হওয়া তথ্য অনুসারে ভারতের অর্থ মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয় মতো হাইপ্রোফাইল সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে টার্গেট করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০২০ সাল থেকে ভারতের অভিবাসন বিবরণ সংক্রান্ত প্রায় ৯৫ GB ডেটা হ্যাক করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হংকং, কাজাখস্তান, মালয়েশিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল ও তাইওয়ানের টেলিকম কোম্পানিগুলোকেও টার্গেট করা হয়েছে। পাশাপাশি ভারত থেকেও ৯৫.২ গিগাবাইট অভিবাসন সংক্রান্ত ডেটা হাতিয়ে নিয়েছে চিনা হ্যাকিং গ্রুপ।
ভারত সরকারের গোপন নথি হ্যাক করেছে চিন। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্টে। ভিসা সংক্রান্ত তথ্য চুরির পাশাপাশি হ্যাকাররা ভারত সরকারের ৯৫.২ গিগাবাইট ইমিগ্রেশন ডেটা হ্যাক করেছে বলেই দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। এদিকে ওয়াশিংটন পোস্টের তদন্ত রিপোর্ট সামনে আসতেই হৈ-চৈ পড়ে গিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে "হ্যাকিং গ্রুপের ফাঁস হওয়া নথি দেখায় যে বেইজিংয়ের গোয়েন্দা এবং সামরিক গোষ্ঠীগুলি বিদেশী সরকার, কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানে বিরুদ্ধে বড় আকারের সাইবার অপরাধ চালাচ্ছ। হ্যাকাররা দাবি করেছে যে মাইক্রোসফ্ট এবং গুগলের পাশাপাশি অ্যাপলের সফ্টওয়্যার সিস্টেমগুলি নিরাপদ নয়।
২০২০ সালের জুনে গালওয়ানে এনকাউন্টারের পরে, কেন্দ্রীয় সরকার গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে চিনা মোবাইল অ্যাপের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিল। তদন্তে আরও জানা গেছে যে প্রায় ৬ হাজার ভারতীয়কে সে সময় টার্গেট করা হয়েছিল।
চিনা এক বেসরকারি কোম্পানি আই-সানের বিপুল সংখ্যক গোপন নথি ইন্টারনেটে ফাঁস হয়েছে। এসব নথি থেকে বেরিয়ে আসছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। নথিগুলি খতিয়ে দেখার পর বিশ্লেষকরা বলেছেন যে এই সংস্থাটি কেবল চিনা জনগণের উপরই গুপ্তচরবৃত্তি করেনি, অনেক দেশের সরকারকেও টার্গেট করেছে তারা।
আই-সান ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং দক্ষিণ কোরিয়া সহ অনেক দেশের সরকারের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করেছে। এ বিষয়ে আই-সান কোনো বিবৃতি দেননি। এর ওয়েবসাইট অনুসারে, কোম্পানির সদর দফতর সাংহাইতে এবং বেইজিং, সিচুয়ান, জিয়াংসু এবং ঝেজিয়াং-এ সংস্থার অফিস রয়েছে।