Vice President: প্রত্যেক মানুষের তাঁর বিশ্বাস পালনের অধিকার রয়েছে। কিন্তু ঘৃণাপূর্ণ বক্তব্য দেশের সংস্কৃতি, সংবিধানের পরিপন্থী। সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে এই বার্তা দিলেন উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। কেরলের কোট্টায়ামের এক অনুষ্ঠানে এক অনুষ্ঠানে সোমবার উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘ঘৃণাপূর্ণ মন্তব্য কিংবা লেখা দেশের সংস্কৃতি, সভ্যতা, সংবিধানের পরিপন্থী। এই দেশে আপনাদের নিজস্ব বিশ্বাস পালনের অধিকার রয়েছে। আপনারা নিজেদের ধর্ম পালন করুন, কিন্তু ঘৃণাপূর্ণ মন্তব্য বা লেখায় ইন্ধন দেবেন না।‘
তাঁর মন্তব্য, ‘যত্ন এবং বিতরণ, ভারতের প্রাচীন সংস্কৃতি। আমরা বসুদৈবা কুটুম্বকম আদর্শে বিশ্বাসী। অর্থাৎ গোটা বিশ্ব একটা পরিবার। প্রাচীন যুগ থেকেই ভারত এই আদর্শে বিশ্বাস করে এসেছে।‘ এদিকে, মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হিন্দুদের অস্ত্র তুলে নিতে হবে। হরিদ্বারে আয়োজিত ‘ধর্ম সংসদে’ উপস্থিত প্রতিনিধিদের প্রতি এই আবেদন করা হল। ডিসেম্বরের ১৭-১৯ পুন্যভূমি হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই রুদ্ধদ্বার সংসদ। সম্প্রতি সংসদের ভিতরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, উপস্থিত প্রতিনিধিদের এভাবে সংকল্প নিতে। জানা গিয়েছে, বিতর্কিত ধর্মগুরু যতি নরসিংহনন্দ এই সংসদের মূল আয়োজক। এর আগেও একাধিকবার উস্কানিমূলক মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়ান তিনি।
কিন্তু হরিদ্বারের সংসদ সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০২৯-এ যাতে কোনওভাবেই দেশে মুসলিম প্রধানমন্ত্রী না হতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই অস্ত্র তুলে নেওয়ার আবেদন। এমনটাই সেই ভিডিওয় উল্লেখ। সেই সংসদে এক বক্তা বলেছেন, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে গুলিবিদ্ধ করে পিস্তল খালি করতে পারতেন তিনি।’ এই সংসদে উপস্থিত ছিলেন দিল্লি বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র অশ্বিনী উপধ্যায়।
যদিও গোটা বিতর্ক থেকে নিজেকে দূরে রাখতে সক্রিয় ছিলেন বিজেপি নেতা। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছিলেন, ‘তিনদিনের অনুষ্ঠানে আমি মাত্র একদিন ছিলাম। মাত্র ৩০ মিনিট মঞ্চে ছিলাম। শুধুই দেশের সংবিধান নিয়ে বলেছি। আমার আগে এবং পরে কে কী বলেছেন, তাঁর জন্য আমি দায়ী নয়।‘
এদিকে, যার সংসদ ঘিরে এত বিতর্ক সেই যতি নরসিংহনন্দ জানান, তিনদিনের সংসদের মূল আলোচ্য ছিল ২০২৯-এ দেশের মুসলিম প্রধানমন্ত্রী। এটা কোনও ভিত্তিহীন ভাবনা নয়। আমাদের আশপাশের পরিবেশ দেখলেই বুঝবেন, কীভাবে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে আর হিন্দুরা কমছে। আগামি ৭-৮ বছরের মধ্যে রাস্তায় শুধু মুসলিমদের দেখা যাবে। গত দুই দশক ধরেই আমি এই কথা বোঝানোর চেষ্টা করছি।‘
এখানেই শেষ নয়। এই ধর্মগুরুর আরও দাবি, ‘মুসলিমদের ইতিহাস দেখুন আগামি ২০ বছরের মধ্যে ৫০% হিন্দু ধর্মান্তরিত হবেন, ৪০% হিন্দুর নিধন হবে আর পড়ে থাকবেন ১০% হিন্দু। তাও এই হিন্দুরা আমেরিকা, কানাডা কিংবা দেশের কোনও উদ্বাস্তু শিবিরে স্থান পাবেন। দেশে কোনও মঠ, মন্দির থাকবে না। আমাদের মা-বোনেদের ধর্ষণ করা হবে কিংবা বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হবে।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন