উচ্চবর্ণ সংরক্ষণ বিলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হলো। আর আজ শনিবার এই বিল আনতে প্রয়োজনীয় সংবিধান (১২৪ তম সংশোধনী) বিল পাস করে দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইউথ ফর ইকোয়ালিটি এবং কৌশল কান্ত মিশ্র তাঁদের আবেদনে বলেন, আর্থিক দুর্বলতা সংরক্ষণের একমাত্র ভিত্তি হতে পারে না। বলা হয়, এই বিলে সংবিধানের ভিত্তিকে অস্বীকার করা হয়েছে। আবেদনের বক্তব্য, সংরক্ষণ কেবলমাত্র আর্থিক কারণে হতে পারে না এবং ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের উর্ধ্বসীমা ভঙ্গ করা যেতে পারে না।
সংসদে এই বিল পাশ হওয়ার একদিন পরেই এই মামলা দায়ের হয়। এই বিল পাশ হওয়ায় সংবিধানে সংরক্ষণ সম্পর্কিত আইন নিয়ে নতুন একটি অধ্যায় লিখতে হবে। মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার তিন দশক পর এই নয়া অধ্যায়।
এর আগে রাজ্যসভায় ১৬৫ ভোটে পাশ হয় সংবিধান (১২৪ তম সংশোধনী) বিল। এই বিলের সুবাদে সাধারণ শ্রেণির অন্তর্গত আর্থিকভাবে দুর্বলরা সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ পাবেন।
হিসেব মতো মঙ্গলবারই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা ছিল। লোকসভার অধিবেশন শেষও হয়ে যায় যথা দিনেই। কিন্তু রাজ্যসভার অধিবেশনের মেয়াদ এক দিন বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল সংরক্ষণ বিল এবং তিন তালাক বিল যাতে পাশ করানো যায় সেই উদ্দেশ্যে।
আরও পড়ুন: মোদী সরকারের প্রস্তাবিত ১০% সংরক্ষণ কে পাবে? কেন পাবে? কীভাবে সম্ভব?
রাজ্যসভায় এই বিল নিয়ে বুধবার তুমুল তর্কবিতর্ক চলে। বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে মুলতুবিও হয়ে যায় অধিবেশন। বিরোধীদের মূল অভিযোগ ছিল, এই বিল একটি রাজনৈতিক 'গিমিক'। লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই বিল আনা হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন তাঁরা।
কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা বলেন, "আদর্শ আচরণবিধি লাগু হওয়ার আগে তড়িঘড়ি করে এই বিল আনা হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে বোঝাই যাচ্ছে যে বিরোধীদেের সঙ্গে সরকারের কোনও আলোচনার অবকাশই নেই।"
সিপিএম সাংসদ ডি রাজা বলেন, "৭ তারিখ বিলে সই করা হয়েছে, ৮ তারিখ খসড়া বিল পাশ হয়েছে, ৯ তারিখ আমরা এ নিয়ে আলোচনা করছি। এ সবের উদ্দেশ্য হল সংবিধানকে খাটো করা।"
এর মধ্যে এদিনের আলোচনায় বহুজন সমাজ পার্টির সাংসদ সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক সংরক্ষণের দাবি তোলেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলকে উদ্ধৃত করে। সিব্বল বলেন, "আর্থিকভাবে অনগ্রসরদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের যে প্রস্তাব মণ্ডল কমিশনে ছিল শীর্ষ আদালত তা অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দিয়েছিল। ৯ জন বিচারপতির বেঞ্চ যদি একে অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দেয়, তারপরেও ফের কীভাবে আপনারা সংবিধান সংশোধন করতে পারেন?"