ফাঁড়া কাটল না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। গোধরা দাঙ্গা কাণ্ডে মোদীকে যে ক্লিন চিট দেওয়া হয়েছিল, তা সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রইল। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর ক্লিন চিটকে চ্যালেঞ্জ করে যে আবেদন জানানো হয়েছিল, শীর্ষ আদালত তা জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত মুলতুবি করে দিয়েছে। ২০০২ সালে গুজরাটের গোধরায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল। সে সময়ে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী।
নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিন চিট দেওয়ার বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি। দাঙ্গায় যে ৬৯ জন খুন হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে এহসান জাফরি ছিলেন অন্যতম। জাকিয়া জাফরির অভিযোগ ছিল ২০০২ ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০২-এর মে মাসের মধ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ঘটেছিল। বিশেষ তদন্ত দলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এর আগে গুজরাট হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন জাকিয়া জাফরি। গুজরাট হাইকোর্ট তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। গুজরাট হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিলেন প্রয়াত কংগ্রেস সাংসদের স্ত্রী।
আরও পড়ুন, ‘কংগ্রেসের মতো বিজেপিতেও পরিবারতন্ত্র’, বলছেন বিজেপিরই বিধায়ক!
২০১২ সালে গুজরাটের এক নিম্ন আদালত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের মোদীকে ক্লিন চিট দেওয়ার রিপোর্টকে মান্যতা দিয়েছিল। সেই রায়কেই ২৯০১৭ সালে বহাল রাখে গুজরাট হাইকোর্ট। ২০০২ সালের দাঙ্গা নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল শুধু নরেন্দ্র মোদীকেই নয়, ক্লিন চিট দিয়েছিল আরও ৫৮ জনকে। তাদের রিপোর্টে সিট বলেছিল এদের কারও বিরুদ্ধেই তেমন কোনও প্রমাণ নেই।
গুজরাট হাইকোর্ট বলেছিল, জাফরির আবেদনে যে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ কথা বলা হয়েছিল, তার কোনও ভিত্তি নেই। তবে হাইকোর্টের বিচারপতি সোনিয়া গোকানি একই সঙ্গে জাকিয়া জাফরিকে নতুন করে তদন্তের দাবিতে নিম্ন আদালত বা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার অনুমতিও দিয়েছিলেন।
গত ২৬ নভেম্বর জাকিয়া জাফরির আবেদন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি দীপক গুপ্তার আদালতে পৌঁছয়। সে সময়ে বেঞ্চ এ আবেদনের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দিয়েছিল। এর আগে গত ১৯ নভেম্বরেও আবেদনের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, কেলেঙ্কারির আঁচ পেয়েও এতদিন নীরব ছিল আয়কর দফতর!
আদালতে বিশেষ তদন্তকারী দলের হয়ে সওয়াল করেন মুকুল রোহতগি। তিনি বলেন, জাকিয়ার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা তথ্যের বিষয়, আর কতদিন এ নিয়ে চলতে পারে?’’ সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, হাইকর্ট এবং নিম্ন আদালত জাকিয়া জাফরির আবেদন খারিজ করার মধ্যে একই কারণ দেখেছে।
জাকিয়া জাফরি তাঁর আবেদনে বেশ কয়েকজন আমলা, পুলিশ আধিকারিক এবং রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্ররোচনা এবং হেট স্পিচের অভিযোগ এনেছেন। তাঁর অভিযোগ এর ফলেই ২০০২ সালের দাঙ্গা হয়েছিল। আবেদনে জাকিয়া জাফরি এও বলেছিলেন যে, করসেবকদের গতিবিধি এবং তাদের অস্ত্র সংগ্রহ সম্পর্কিত তথ্য রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের কাছে থাকলেও তা নিয়ে কোনও রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।