দিদি প্রিয়াঙ্কা নিজেই সুশান্ত সিং রাজপুতকে মানসিক অবসাদের ওষুধ দিয়েছিলেন। প্রিয়াঙ্কা সিংয়ের সেই মেসেজ প্রকাশ্যে এসেছে। তাহলে কি সুশান্তের পরিবার তাঁর মানসিক অবসাদের কথা জানত? ফের একবার এই প্রশ্ন উঠে গেল।
১৪ জুন বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে অভিনে সুশান্ত সিং রাজপুতের দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, এর ৬ দিন আগে অভিনেতাকে মানসিক অবসাদের ওষুধ দিয়েছিলেন দিদি প্রিয়াঙ্কা সিং। মানসিক অবসাদ নিয়ে তাঁদের দু'জনের মধ্যে মেসেজ চালাচালিও। সেই সময়ই সুশান্তকে বেশ কয়েকটি ওযুধের কথা জানান প্রিয়াঙ্কা। সিবিআই ও ইডি-র তদন্তে এই বিষয়টি উঠে এসেছে।
তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেই ওষুধ নেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছিলেন সুশান্ত। তখন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছিলেন যে, তাঁর ডাক্তার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেই মানসিক অবসাদের ওষুধগুসো সুশান্তকে নিতে বলা হচ্ছে। একটি প্রেসক্রিপসনও সুশান্তকে দিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। ৮ জুন তারিখের ওই প্রেসক্রিপসনে দিল্লির রামমোনহর লোহিয়া হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ তরুণ কুমারের সাক্ষর রয়েছে।
একাধিকবার ডাঃ তরণ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। রামমোনহর লোহিয়া হাসপাতালের সুপারও এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
সুশান্ত ও প্রিয়াঙ্কার ওই মেসেজ অনুযাযী, প্রিয়াঙ্কা অভিনেতাকে বলেছিলেন- 'প্রথম একসপ্তাহ আগে লিব্রিয়াম খাও। তারপর থেকে প্রতিদিন জলখাবার খাওয়ার পরে নেক্সিটো ১০ মিলিগ্রামের একটি করে ট্যাবলেট। আর যখনই প্যানিক অ্যাটাক হবে তখন একটা করে লোনাজেপ খাবে। ওটা হাতের কাছে রেখে দিও।' জবাবে সুশান্ত সিং রাজপুত জানিয়েছিলেন যে, 'কেউ তো তাঁকে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ দেবে না।' তখন প্রিয়াঙ্কা বলেন, 'দেখছি আমি ম্যানেজ করতে পারি কিনা।' তারপরই প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছিলেন, 'এখানে আমার এক পরিচিত চিকিৎসক বন্ধু আছে। সে তোমাকে মুম্বইয়ের এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে পারবে। সবটা গোপন থাকবে। চিন্তা নেই।' এরপর প্রিয়াঙ্কা একটি প্রেসক্রিপশনের ছবি পাঠান।
প্রিয়াঙ্কা ও সুশান্তের মধ্যে এই মেসেজ চালাচালি ও ভয়েস কল হয় ৮ জুন ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত।
সুশান্তের মানসিক অবসাদের কথা তাঁরা জানতেন না বলে এর আগেই জানিয়েছেন অভিনেতার বাবা কে কে সিং। এমনকী তাঁর যে চিকিৎসা চলছিল, সেই তথ্যটুকুও তাঁদের দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সুশান্তের প্রাক্তন বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ওষুধ দেওয়ারও অভিয়োগ তোলা হয়েছে। সুশান্তকে হত্যা করা হয়েছে বলে রিয়া সহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে বিহার পুলিশে অভিযোগও জানিয়েছেন কে কে সিং। আপাতত সুশান্ত মৃত্যুকাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই।
গত ৩রা অগাস্ট দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে উঠে আসে, মৃত্যুর আগে সুসান্ত সিং রাজপুত গুগলে মানসিক অবসাদ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সার্চ করেছিলেন। সুসান্তের পরিবারের আইনজীবীর দাবি, 'প্রিয়াঙ্কার মেসেজ ও তাঁদের দাবি পরস্পর বিরোধী নয়। পরিবারকে সুশান্ত উদ্বেগের কথা বলেছিলেন, কিন্তু মানসিক অবসাদের বিষয়ে কিছু বলেননি। লকডাউনের সময়কালে একটি অনলাইন প্রেসক্রিপসন মিলেছে।'
রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে এ প্রসঙ্গে কিছু জানাতে চাননি। তবে আগে বলেছিলেন যে, সুশান্তের পরিবার তাঁর অসুস্থতা নিয়ে অবগত ছিলেন।
সুতরাং সুশান্তকে করা প্রিয়াঙ্কা সিংয়ের মেজেস সামনে আসতেই অভিনেতার মৃত্যু তদন্ত নতুন মোড় নিতে পারে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন