দেশের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে উত্তাল সারা ভারত। অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ তাঁকে যৌন হেনস্থা করে এবং তাঁর চাকরি খোয়া যায়। রাজ্যসভা সচিবের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন মহিলার সঙ্গে যা হয়েছে তা অন্যায়। এ ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন ওই আধিকারিক।
মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে লক্ষণ সিং নেগি জানিয়েছেন তিনি অভিযোগকারিণী মহিলার হয়ে সওয়াল করতে চাইলে বাধা দেওয়া হয় তাঁকে।
অভিযোগকারিণী এক ৩৫ বছরের মহিলা কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট। তাঁর অভিযোগ মূলত দু’টি কারণ দেখিয়ে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এক তাঁর দফতরে দায়িত্ব বদলানোর পেছনে কারণ জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন তিনি। এবং মেয়ের স্কুলে এক প্রদর্শনী চলায় তিনি কাজে আসতে না পারায়।
অভিযোগকারিণী ২০১৪ সালের মে মাসে আদালতে যোগ দেন। অভিযোগে তিনি ৯ জন আদালত আধিকারিকের নাম বলেছেন। বর্তমান প্রধান বিচারপতির নির্দেশে তাঁকে আদালতের সবচেয়ে কাছের মেট্রো ছেড়ে আসতেন যে গাড়িচালক, তাঁর নামও উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ রয়েছে দুই পড়শির নাম, যারা তাকে প্রথম বলেন তাঁর পরিবার সম্পর্কে পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে।
চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পরেই তিনি এইমস এ যে নিউরোলজিস্টের চিকিৎসাধীন ছিলেন, তার সমস্ত প্রমাণ সঙ্গে নিয়েই অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে প্রথমে শীর্ষ আদালতের এক আধিকারিকের কাছে গিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। সেখানে ওই মহিলাকে কোনও প্রশ্ন তো করাই নেই। অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ জমা দেওয়ার দিন মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ছুটতে হয় তাঁকে, তা সত্ত্বেও তদন্ত চলতে থাকে এবং অভিযোগকারিণীর বিপক্ষে যায় এমন রিপোর্ট তৈরি করা হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
আরও পড়ুন, শ্রীলঙ্কার ধারাবাহিক বিস্ফোরণের দায় স্বীকার আইসিস জঙ্গি গোষ্ঠীর
নেগি জানিয়েছেন, ওই মহিলাকে জানিয়েছিল শীর্ষ আদালতের কারোর মধ্যে থেকেই সদস্য বাছতে হবে যিনি মহিলার পক্ষে সওয়াল করবেন। "কিন্তু এ ক্ষেত্রে মহিলাকে জিজ্ঞেস করা হয় তাঁর পছন্দের প্রার্থী তাঁর হয়ে সওয়াল করতে রাজি কিনা। আমার দফতরকে চিঠি লেখা উচিত ছিল আদালতের। আমার মতে এ ক্ষেত্রে আদালত 'ন্যাচারাল জাস্টিস' লঙ্ঘন করেছে"।
নেগির অভিযোগ, মহিলাকে আদালত একবারও জানায়নি তদন্ত চলাকালীন তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে কি না। "সাধারণত তদন্ত চলাকালীন নিয়মিত সমস্ত প্রক্রিয়াই রেকর্ড হওয়ার কথা। এবং প্রক্রিয়ার লিখিত নথিতে তদন্তকারী আধিকারিক এবং ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের স্বাক্ষর থাকে। এ ক্ষেত্রে সসব কিছুই ছিল না। সব কিছু খুব গোপন এবং অস্বচ্ছ ভাবে করা হয়েছে"।
আদালতের প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে শীর্ষ আদালতের সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও পাওয়া যায়নি তাঁকে।
Read the full story in English