জম্মু-কাশ্মীরে অচলাবস্থা এবং বিভিন্ন ব্যক্তিকে আটক করা নিয়ে কেন্দ্রকে সরকারি হুকুমনামা বুধবার প্রকাশ্যে আনার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। একথা জানিয়েছে 'বার অ্যান্ড বেঞ্চ'।
উপত্যকায় মিডিয়া এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে জারি করা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেন 'কাশ্মীর টাইমসের' সম্পাদিকা অনুরাধা ভাসিন, যার শুনানি হয় বিচারপতি এনভি রামনা, আর সুভাষ রেড্ডি, এবং বিআর গভাই-এর বেঞ্চের সামনে।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কাছে বেঞ্চের প্রশ্ন ছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশ কেন নথিভুক্ত করা হয় নি। "এটা কি ইচ্ছাকৃত?" প্রশ্ন তোলে আদালত।
জবাবে মেহতা বলেন, ভাসিনের মূল আবেদনে স্রেফ উপত্যকায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়। "এলাকার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। আবেদনকারী এখন তাঁর আবেদনের পরিধি বাড়িয়ে নির্দেশ প্রকাশ করার কথা বলেছেন," বলেন তিনি।
ভাসিনের পক্ষে সওয়াল করে এবং মেহতার বক্তব্য খণ্ডন করে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার বলেন, আবেদনে প্রাথমিকভাবেই ওই নির্দেশাবলী প্রকাশ্যে আনার কথা বলা হয়েছে যাতে সরকারি সিদ্ধান্তের বৈধতা যাচাই করা যায়। আদালত এই যুক্তির সারবত্তা মেনে নিয়ে গ্রোভারের সঙ্গে সহমত পোষণ করে।
তবে সলিসিটর জেনারেল জানান, "আমরা ওই নির্দেশাবলী পেশ করতে পারি, কিন্তু যেখানে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার প্রশ্ন থাকে, সেখানে প্রশাসনিক নির্দেশের ক্ষেত্রে কেউ আপিল করতে পারেন না, বিশেষ করে এই আবেদনকারীরা তো নয়ই।"
প্রত্যুত্তরে বেঞ্চ মন্তব্য করে, কেন্দ্র যদি মনে করে যে কোনও নির্দিষ্ট হুকুমনামা সর্বসমক্ষে পেশ করবে না, তবে তার কারণ দেখিয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৫ অক্টোবর।
শুনানি চলাকালীন আদালতকে মেহতা বলেন যে শেষবার এই মামলার শুনানির সময় কেন্দ্রের তরফে জবাব নথিভুক্ত করা হয়। বদলে গ্রোভার বলেন, ওই জবাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করার নির্দেশ নিয়ে কিছু বলা হয়নি। ভাসিনের জমা দেওয়া পাল্টা জবাবে একথার উল্লেখ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
জম্মু ও কাশ্মীরে জনসাধারণের চলাফেরা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় গত ৪ অগাস্ট। তার একদিন পরেই রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দেয় কেন্দ্র। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে, এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ রুখতে ওই নিষেধাজ্ঞা জরুরি।